অর্থনীতিজাতীয়সারাদেশ

পূর্বাচলে মাসব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা’ শুরু হচ্ছে পহেলা জানুয়ারি

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : দ্বিতীয় বারের মতো পূর্বাচলের চায়না এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী ‘২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিইটিএফ)-২০২৩’ পহেলা জানুয়ারি (রোববার) শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, ‘এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এবারের মেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।’

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী ডিইটিএফ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান মন্ত্রী। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উদ্যোগে প্রতি বছর এ মেলা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মেলায় খাদ্যপণ্যের মান এবং মূল্যের বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। খাদ্য পণ্যের মূল্য নির্দিষ্ট থাকবে। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর মেলায় অভিযান পরিচালনা করবে। মেলায় যাতায়াতে যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তার ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য গতবারের মতো সার্টেল সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে। কুড়িল বিশ্বরোড হতে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ৭০টি বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বাসের ভাড়া ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মেলা চলাকালীন বাসগুলো চলাচল করবে।

টিপু মুনশি আরও বলেন, মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। এবারে মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকেট অনলাইনে কিনলে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টের সুযোগ থাকবে। মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আমাদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লাভের উদ্দেশে এ মেলার আয়োজন করা হয় না। গতবছরও এ মেলায় দুইশত কোটি টাকা মূল্যের পণ্য রপ্তানির স্পট আদেশ পাওয়া গেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্থায়ী এক্সিবিশন সেন্টারে একটু দুরে হলেও মেলায় অংশগ্রহণকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এ মেলার মাধ্যমে আমরা আমাদের তৈরি পণ্য দেশি-বিদেশি সকলের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পাই। ক্রেতারাও পণ্যের মধ্যে তুলনা করার সুযোগ পান, এতে করে পণ্যের মানও উন্নত হয়। বাংলাদেশের তৈরি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরাই এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মূল উদ্দেশ্য।

আমাদের পণ্যের মান উন্নত এবং মূল্য কম হবার কারণে প্রতি বছর আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। গত বছরও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি রপ্তানি হয়েছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক এর পাশাপাশি আরও ১০টি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিটি আমাদের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় পণ্য। অল্পদিনের মধ্যে এ খাতের রপ্তানি ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আশা করছি। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে বিশ্ব বাজারে। সবমিলিয়ে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে, যোগ করেন মন্ত্রী।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ, এম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান এবং অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিমসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মেলায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দু’টি হলের বাইরে মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনিপ্যাভিলিয়ন রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবারের আসরে আগের তুলনায় মেলায় স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। এসব স্টল ও প্যাভিলিয়নের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button