আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ধর্মীয় ও চরম জাতীয়তাবাদী জোট সরকার ক্ষমতায় এলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। বিশেষ করে বিচার বিভাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা পর সম্ভবত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলে আবার নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। কিন্তু বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে কট্টর দক্ষিণপন্থি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই দেশের বিভিন্ন মহলে চরম প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কারণ সম্ভাব্য সরকারের শরিকদের মধ্যে এমন কিছু নেতা রয়েছেন, যাদের আচরণ ও অবস্থান গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর জোরালো আঘাত আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিল্প-বাণিজ্য মহল ও প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছেন।

গত ১লা নভেম্বরের নির্বাচনের পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে বিতর্কিত জোট সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর সরকারের রূপরেখা প্রায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হলেও চরম দক্ষিণপন্থি সহযোগীরা ইসরায়েলের জাতীয় পুলিশ বাহিনী ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের দায়িত্ব পেতে চলেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মন্ত্রিত্বের পথে বাধা দূর করতে নতুন সরকার আইন প্রণয়নের তোড়জোড় করছে। দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেও আইনি অভিযোগ এড়ানোর উদ্যোগও চলছে। সে ক্ষেত্রে ইসরায়েলের বিচার বিভাগ দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।

ইসরায়েলের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা চূড়ান্ত না হলেও কয়েকটি নাম নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে। বিশেষ করে জুইশ পাওয়ার পার্টির ইতামার বেন গভির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী এবং রিলিজিয়াস জায়নিসম দলের বেজালেল স্মট্রিশ অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতির দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দুই নেতাই সেখানে বাস করেন। আরব জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে নারীদের অধিকার এবং এলজিবিটিকিউ সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে তাঁদের অবস্থান প্রবল বিতর্কের কারণ।

সোমবার ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর এক হাজারেরও বেশি প্রাক্তন সদস্য দেশের সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য আইনি কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে লেখা এক খোলা চিঠিতে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেবার আর্জি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, ধর্মীয় ও চরম জাতীয়তাবাদী দলগুলির এই জোট ইসরায়েলের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। সেই বিপর্যয় এড়াতে তাঁরা ‘সুরক্ষার শেষ বলয়’ হিসেবে বিচার বিভাগকে সক্রিয় হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান ড্যান হালুৎস ও বিমানবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান আভিহু বেন-নুনের মতো শীর্ষ ব্যক্তিত্বও রয়েছেন।

সোমবারই ইসরায়েলের শিল্প-বাণিজ্য জগতের একাধিক নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সম্ভাব্য নতুন সরকারের বিতর্কিত অবস্থানের আলোকে অভ্যন্তরীণ বৈষম্য-বিরোধী বিধিনিয়ম আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগের অঙ্গীকার করেছে। লিঙ্গ বিষম্য ও সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কে সম্ভাব্য সরকারের সদস্যদের একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের আলোকে এমন অবস্থান নিচ্ছে শিল্প-বাণিজ্য জগতের একাংশ।

 

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button