অন্যান্য

পর্দার আড়ালে থাকা ক্ষমতা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : হাউজ অব সৌদ বা সৌদি রাজবংশের নারীরা দেশটির প্রধান নন। হয়তো তারা মন্ত্রী, গভর্নর, বিচারক, কর্মকর্তা বা ঐতিহ্যবাহী রাঁধুনিও নন। তাদের সামাজিক আচরণের ওপরও রয়েছে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা। এসব পরিপ্রেক্ষিতে বাইরের পর্যবেক্ষকরা হয়তো বলবেন, পুরুষতান্ত্রিক ওই সমাজে নারীদের দেখা হয় অবদমিত হয়ে থাকা কারাবন্দির মতো করে। কিন্তু যদি আনুষ্ঠানিক পদমর্যাদার বাইরে গিয়ে দৃষ্টি দেয়া যায়, তখন দেখা যাবে তারা কতটা প্রভাব বিস্তারকারী।

নারীদের ক্ষমতায়নের দিকে আলো ফেলতে গিয়ে অনেক ইতিহাসবিদ পরবর্তী শতাব্দীতে ক্ষমতার উত্থান থেকে সুলতান সুলেমানের পরে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন পর্যন্ত হারেমের নেতৃত্ব দেয়া নারীদের সম্পর্ক তুলে এনেছেন। টার্কিশ ইতিহাসবিদ আহমেত রেফিক আল্টিনাই, সেই সময়ে ‘সালতানাত অব উইম্যান’ শব্দটির সঙ্গে পরিচয় করান। ১৯১৬ সালে এ শিরোনামে তার লেখা বইটিতে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর ১৩০ বছরে হারেম থেকেই প্রবল রাজনৈতিক প্রভাব উঠে আসার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রায়ই দেখা যায় সরকারের একটি কেন্দ্রীভূত ধরন সেখানকার নারীদের সুলতানের আরো বেশি নৈকট্য দিয়েছে, সেই সঙ্গে রাজপরিবারে দিয়েছে অনেক মর্যাদা। সুলতানের মা, তার গুরুত্বপূর্ণ উপপত্নী এবং কখনো কখনো তার বোনও ক্ষমতা পেয়েছে, বিপরীতে ক্ষমতা হারিয়েছে রাজকুমাররা।

শক্তিশালী নারীরা সৌদি ক্ষমতার সব ক্ষেত্রেই নিজেদের ছাপ রেখেছেন। এক্ষেত্রে আলোচনা আনা যায় সৌদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রাজা আবদুলআজিজের ফুপু আল-জোহরা বিনতে ফয়সালকে। ফুপুই মূলত তাকে কুয়েত থেকে আবার নজদে ফিরে আসতে এবং নিজের পরিবারের ভূমিগুলো পুনরুদ্ধার করতে প্রেরণা দেন ও উৎসাহিত করেন। ইসলামের বিষয়ে তার ছিল প্রবল জ্ঞান এবং রাজার সর্বাধিক বিশ্বস্ত পরামর্শকদের একজন ছিলেন তিনি। আবদুলআজিজ তার কাছ থেকে আগের সব শাসকের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ঐতিহাসিক আনুগত্য এবং নৃগোষ্ঠী ও স্বতন্ত্র ব্যক্তিদের ভূমিকা নিয়ে জানতে পারেন। ১৯৩০ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিয়মিত প্রতিদিন তার সঙ্গে দেখা করতেন আব্দুলআজিজ।

আবদুলআজিজের প্রসঙ্গ এলে উঠে আসে তার বড় বোন নোরার কথাও। তার সঙ্গেও খুব বেশি সম্পৃক্ত ছিলেন রাজা। কিছু কিছু জনসমাগমে তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, আমি নোরার ভাই। নোরা একসময় রাজার মূল পরামর্শক হয়ে ওঠে, এমনকি যখন রাজা রাজত্ব পরিচালনায় অসমর্থ ছিলেন তখন তিনি সেটাও চালিয়েছেন। আবার যখন রাজা কোনো কারণে রেগে যেতেন তখন সবাই প্রথমত দ্বারস্থ হতো নোরারই কারণ শুধু তার মাধ্যমেই রাজার হূদয় বা মনে প্রবেশ করা সম্ভব। কিছুটা আধুনিক ও স্পষ্টভাষী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন নোরা। যখন দেশে প্রথম টেলিফোন আসে তখন অনেকে বলেছিল, ওটা শয়তানের হাতিয়ার। তখন নোরা এর পক্ষে দাঁড়ান এবং বলেন, এটি একটি অসাধারণ যন্ত্র, যা ছাড়া একসময় বাঁচাই যাবে না। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালে কিং আব্দুল্লাহ তার ফুপুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সৌদি আরবের প্রথম নারী ইউনিভার্সিটির নামকরণ করেন প্রিন্সেস নোরা ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান।

হেসা বিনতে আহমাদ আল-সুদাইরিকে মনে করা হতো আব্দুলআজিজের প্রিয় স্ত্রী। রাজার অনেকগুলো স্ত্রী থাকতে পারে কিন্তু ইসলামী আইন অনুসারে একই সময়ে চার জনের বেশি স্ত্রী নয়। আবদুলআজিজ হেসাকে দুইবার বিয়ে করেন, ১৯১৩ সালে যখন প্রথমবার বিয়ে করেন তখন তার বয়স ১৩ বছর। এরপরে আবার করেন ১৯২০ সালে। এই সময়ে তিনি আবদুলআজিজের সত্ভাই মুহম্মদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। কেউ কেউ বলে, আবার বিয়ে করার জন্য দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ হতে বাধ্য করেন আবদুলআজিজ। এই দুজনের সংসারে ৭টি ছেলের জন্ম। হেসার সমর্থনেই তারা রাষ্ট্রের বড় বড় সব অবস্থানে পৌঁছাতে সমর্থ হয়। সাত সন্তানকে একসঙ্গে বলা হতো ‘সুদাইরি সেভেন’। সাত ভাই মিলে দেশের প্রতিরক্ষা ও এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয় ১৯৬২ সালে, ১৯৭৫ সালে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ১৯৮২ সালে এক ভাই ফাহাদ সিংহাসনে আরোহণের পর হয়ে ওঠে রাজপরিবারের সবচেয়ে শক্তিশালী জোট।

যেখানে রাজপরিবারের পুরুষরা শাসনভার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সেখানে পরিবারের নারীরা বেশকিছু নির্ধারিত ক্ষেত্র পুনর্গঠনে পদপ্রদর্শক হিসেবে সফলতা অর্জন করেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত রাজা ফয়সালের স্ত্রী ইফফাত। তিনি রাজা ফয়সালের সবচেয়ে কাছের পরামর্শক এবং এ রাজ্যে নারীদের শিক্ষার বিস্তারে অনেক বড় ভূমিকাও পালন করেন তিনি। ১৯৫৫ সালে তিনিই প্রথম জেদ্দাভিত্তিক ডার-আল-হানান প্রতিষ্ঠা করেন, সৌদি আরবে নারীদের জন্য প্রথম স্কুল ছিল এটি। স্ত্রীর কাজের প্রতি সবসময় সমর্থন জোগাতেন রাজা ফয়সাল। ১৯৯৯ সালে মৃত্যুর কয়েকদিন আগেই ইফফাত একটি কলেজ খোলেন ‘ইফফাত কলেজ’ নামে, বর্তমানে যা ইফফাত ইউনিভার্সিটি। সেটা ছিল সৌদির প্রথম বেসরকারি অলাভজনক নারীদের কলেজ। সৌদি আরবের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা থাকায় ফার্স্ট লেডির জন্য কোনো সম্বোধনের প্রচলন না থাকা সত্ত্বেও তাকে ডাকা হতো ‘রানী ইফফাত’ নামে। রাজা ফয়সালের সব মেয়েই ছিল খুবই শিক্ষিত, কর্মঠ ও স্পষ্টভাষী।

তার কন্যাদের একজন প্রিন্সেস ললওয়াহ। ২০০৭ সালে সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে অংশ নিয়ে বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেন। তিনি জনসম্মুখে জানান, যদি দেশের একটি বিষয়ে পরিবর্তন আনতে চান তাহলে সেটি হবে নারীদের গাড়ি চালাতে দেয়া। তিনি প্রায়ই নানা বিষয়ে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করতেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি সৌদির নারী ব্যবসায়ীদের পুরুষ জেনারেল ম্যানেজার নিয়োগের প্রথারও সমালোচনা করেন।

রাজা আব্দুল্লাহর স্ত্রীদের মধ্যে হাসা বিনতে ট্রাদ আল-শানান এবং আইদা ফাসতাককে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। আইদার গর্ভেই জন্ম নেয় আদিলা নামের এক মেয়ে, যে একসময় রাজার প্রিয় কন্যা হয়ে ওঠে। আদিলা খুবই দক্ষতার সঙ্গে নারীদের স্বাস্থ্যসচেতনতা এবং আইনি অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। সেই সঙ্গে নারীদের শিক্ষা, চাকরির সুযোগ নিয়েও কথা বলতেন তিনি। পাশাপাশি বেশকিছু দাতা ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকও তিনি। ন্যাশনাল হোম হেলথকেয়ার, ন্যাশনাল মিউজিয়াম অ্যাডভাইজরি কমিটি, সানাদ চ্যারিটি ফর চাইল্ড সেন্টার এবং দি ন্যাশনাল ফ্যামিলি সেফটি প্রোগ্রামের প্রধান তিনি।

জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসায়ী নারীদেরও সমর্থন জুগিয়েছেন রাজকুমারী আদিলা। তার স্বামী শিক্ষামন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ। অনেকেরই ধারণা, তার প্রভাবেই রাজা আব্দুল্লাহ নারীদের শিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠনে মনোযোগ দেয়। কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ করা আদিলা নারী শিক্ষার বিষয়ে খুবই সচেতন ছিলেন। তার এসব উদ্বেগের বিষয়ে সতর্ক ছিলেন তার স্বামীও। ফয়সালই সৌদি রানীদের শ্রমবাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে। তিনি মনে করেন সৌদি নারীদের শক্তি অপচয় হচ্ছে, সেজন্য তা সমাজের ভালোর জন্য ব্যবহার করা উচিত।

যদিও তার এসব পদক্ষেপ সব সৌদিবাসী খুব বেশি স্বাগত জানায়নি। রক্ষণশীল ইসলামপন্থীরা শিক্ষামন্ত্রীরই সমালোচনা শুরু করে বলেন, তিনি স্বাধীনচেতা স্ত্রীর দ্বারা প্রভাবিত। রাজবংশের অন্যান্য নারীও রক্ষণশীল শক্তিগুলোকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাদের একজন প্রিন্সেস সারা, যিনি আরেক প্রভাব বিস্তারকারী প্রিন্স মুসাইদের কন্যা। সৌদি আরবজুড়ে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লেখালেখি করা অ্যাক্টিভিস্টদের খুব বেশি সমর্থন জোগাতেন সারা। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড মুফতি আবদুলআজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল-শায়েখকে চিঠি লিখে আলোচনায় আসেন।

তাছাড়া সৌদি রাজবংশের নারীরা ব্যবসা ক্ষেত্রেও বেশ সফলতার সঙ্গে ভূমিকা রাখছে। অন্য নারীদের সঙ্গে তুলনা করলে সৌদি রাজকুমারীদের কোনো ব্যবসা শুরু ও পরিচালনার জন্য অভিভাবকের প্রয়োজন পড়ে না। তারা খুব সহজেই সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্সও পেয়ে যায়। নিজেদের পরিচয়ের জন্যই যেখানে সাধারণ সৌদি নারীরা প্রবেশ করতে পারে না, সেখানেও তারা প্রবেশ করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, লুথান ট্রেডিং কোম্পানির কথা, সৌদি আরবে নারীদের জন্য ফিটনেস সেন্টার এটি, পাশাপাশি নারীদের জন্য বানানো প্রথম হোটেল। এ কোম্পানির ২০ সদস্যের মধ্যে প্রধান হিসেবে রয়েছেন প্রিন্সেস মাদাওয়ি বিনতে মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ। আরেকজন সহপ্রধান হলেন প্রিন্সেস রিমা বিনতে বান্দার বিনতে সুলতান।

রাজপরিবারের পুরুষদের মতোই নারীদেরও একটি ক্রম রয়েছে হাউজ অব সৌদে। একজন রাজকুমারীর অবস্থান বিভিন্ন বিষয়াদির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। তার মধ্যে রয়েছে পারিবারিক শাখায় আত্মীয়তা, বৈবাহিক বংশ, বয়স এবং বিভিন্ন ব্যক্তিগত যোগ্যতা। রাজকীয় অনুক্রম দিয়েই সম্মানজনক শিরোনাম তুলে ধরা হয়। সেখানে আবদুলআজিজের কন্যা ও নাতনিদের ‘হার রয়্যাল হাইনেস’ নামে অভিহিত করা হয়, আর ক্যাডেট লাইনের অন্যদের ‘হার হাইনেস’ নামে ডাকা হয়। এ অনুক্রমের ওপরের দিকে আবদুলআজিজের জীবিত অল্প কিছু কন্যা যেমন লুলুয়া, আল-জোহরা, লতিফা, নৌফ ও সীতা রয়েছেন। এসব রাজকুমারী রাজা ও তার ভাইদের কাছ থেকে প্রবল সম্মান পান, একইভাবে পান পরিবারের অন্যদের কাছ থেকেও।

রাজপরিবারের অন্যান্য বয়সী নারীরা তাদের পুরুষ আত্মীয়দের মতোই সামাজিকীকরণের অংশ হিসেবে উন্মুক্ত দর্শক ধারণ করতেন, আবার কমবয়সী রাজকুমারীরা রাজকীয় নয় এমন সব দাতব্য কাজে অংশ নিয়ে এসব সম্পর্ক বজায় রাখতেন। ২০০৩ সালে রাজা আব্দুল্লাহর বোন প্রিন্সেস সীতা একটি প্রিন্সেস কাউন্সিল তৈরি করার উদ্যোগ নেন। যেখানে রাজপরিবারের উপশাখাগুলোর প্রতিটি থেকে একজন করে রাজকুমারী অংশ নিতে পারবেন। সেটাই ছিল সৌদি আরবের রাজবংশের নারীদের প্রথম পারিবারিক কাউন্সিল। সেখানে অংশ নেয়া প্রতিজন ভিন্ন ভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজ করতেন। কেউ স্বাস্থ্য, শিশু, নারী এবং ব্যবসা নিয়ে কাজ করতেন।

বর্তমানেও নানাভাবে নানা সময়ে আলোচনায় এসেছেন সৌদি রাজকুমারীরা। এই যেমন মোহাম্মদ বিন সৌদ আল-সৌদের মেয়ে রাজকুমারী হাইফা। পুরো সৌদি আরবের পট বদলে দেয়া একজন রাজকুমারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। দেশটির পর্যটন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে সবসময় সামনের দিকে থেকেছেন হাইফা বিনতে মোহাম্মদ আল-সৌদ। যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে পড়াশোনা করা এই রাজনারী মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংকেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের পর্যটন খাতের ডেপুটি মিনিস্টার। খেলাধুলা ও নারী শক্তি নিয়েও বেশ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ করেছেন এই রাজকুমারী।

আলোচনায় থাকা আরেক রাজকুমারীর নাম প্রিন্সেস বাসমাহ বিনতে সৌদ বিন আবদুলআজিজ আল-সৌদ। কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই তিন বছর দেশের কারাগারে বন্দি থাকেন ৫৭ বছর বয়সী এই মানবাধিকার আইনজীবী। ২০১৯ সালে তিনি আটক হন। প্রিন্স মোহাম্মদের চালানো ক্র্যাকডাউন ও ক্ষমতা একত্রীকরণের বিরুদ্ধে ভিন্নমত প্রয়োগের কারণেই তিনি এই হয়রানির শিকার হন বলে অনেকের মত। তার পরও তাকে দেখা হয় ভিন্নমতের শক্তির প্রতীক হিসেবেই।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button