বিশ্বকাপের মাঠ পরচিতি : স্টেডিয়াম ৯৭৪
গাজীপুর কণ্ঠ, খেলাধুলা ডেস্ক : আর মাত্র ৭ দিন বাকি, অতঃপর বেজে উঠবে দামামা, শুরু হবে লড়াই। মরুর দেশ কাতারে শুরু হবে ৩২ দেশের ফুটবল মহারণ। ৮টি রণাঙ্গনে হবে এই লড়াই। আজ থাকছে ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪।’
অবাক হচ্ছেন! একটা স্টেডিয়ামের নাম আবার সংখ্যা দিয়ে হয় কি করে। হ্যা, এটাই এবারের কাতার বিশ্বকাপের ৮টি ভেন্যুর একটি। স্টেডিয়ামটির নামে যেমন বৈচিত্র্য রয়েছে তেমনি বৈচিত্র্য রয়েছে এর নির্মাণশৈলীতেও। এটা বিশ্বের অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি স্টেডিয়াম তো বটেই, বিশ্বের প্রথম পরিবহনযোগ্য স্টেডিয়ামও এটিই।
মূলত কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড থেকেই স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়েছে। কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড হচ্ছে ৯৭৪। আর সেটার সাথে মিল রেখেই স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়েছে ৯৭৪। অবশ্য স্টেডিয়ামটির নামকরণে আরেকটি বিষয়ের সাথেও মিল রয়েছে। স্টেডিয়ামটি নির্মাণে মোট ৯৭৪টি পরিবহনযোগ্য কন্টেইনার ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে বিশ্বকাপ শেষে সহজেই স্টেডিয়ামটি অন্যত্র স্থানান্তর করা যায় বা ভেঙ্গে ফেলা যায়।
কাতারের রাজধানী দোহার প্রাণকেন্দ্র রাস আবু আবুদে স্টেডিয়ামটির অবস্থান। জায়গার নামানুসারে অনেকে একে রাস আবু আবুদ স্টেডিয়াম নামেও ডাকে। সমুদ্র তীরবর্তী জায়গায় হওয়ায় সহজেই স্টেডিয়ামটি নির্মাণে কন্টেইনার ব্যবহার করা গিয়েছে। আর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্বকাপ শেষে স্টেডিয়ামটি ভেঙে আবার কন্টেইনারগুলো আগের জায়গায় সরিয়ে ফেলা হবে। দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিখ্যাত ওয়েস্ট বে স্কাইলাইনের খুব কাছেই অবস্থান হওয়ায় কাতারবাসীর কাছের দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে স্টেডিয়ামটি।
স্টেডিয়ামটির আসন সংখ্যা মোট ৪০ হাজার। স্টেডিয়ামটির প্রথম নকশা প্রস্তুত করা হয় ২০১৭ সালে। এরপর ২০১৮ সালে স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় আর ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর আরব কাপের উদ্বোধনী ম্যাচের মাধ্যমে উন্মুক্ত করা হয়। দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের খুব কাছে এবং দোহার প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় খুব সহজেই রাস আবু আবুদ মেট্রো স্টেশন থেকে পায়ে হেঁটেই স্টেডিয়ামে যাওয়া যাবে।
২০৩০ সালে ফিফা বিশ্বকাপ শতবর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। আর সেই আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই অনেক দেশ যৌথভাবে বিশ্বকাপের শতবর্ষী আসরের আয়োজক হতে চাচ্ছে। যার মধ্যে লাতিন আমেরিকান অঞ্চল থেকে উরুগুয়ে- প্যারাগুয়ে-চিলি এবং আর্জেন্টিনাও যৌথভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিড করেছে। আর কাতার কর্তৃপক্ষ এবং উরুগুয়ের কর্তৃপক্ষ এটা নিশ্চিত করেছে যে যদি উরুগুয়ে যৌথভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের অনুমতি পায় তাহলে সেই বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলার জন্য স্টেডিয়াম ৯৭৪ উরুগুয়েতে স্থানান্তর করা হবে এবং উরুগুয়ের মালদোনাদোতে স্থাপন করা হবে।
স্টেডিয়াম ৯৭৪ এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। স্টেডিয়ামটি নির্মাণে অনেক বাংলাদেশী শ্রমিক দিনরাত এক করে কাজ তো করেছেনই পাশাপাশি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে স্টেডিয়ামটির প্রধান চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করবেন একজন বাংলাদেশী ডাক্তার। যার নাম ডাক্তার আয়েশা পারভীন। যা প্রতিটা বাংলাদেশী এবং সেদেশে থাকা প্রতিটা বাঙ্গালীর জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
গতবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সসহ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং পর্তুগালের বড় বড় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামটিতেই। বিশ্বকাপের মোট ৭টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে স্টেডিয়াম ৯৭৪ টিতে।
আরো জানতে…….
বিশ্বকাপের মাঠ পরিচিতি : আল বাইত স্টেডিয়াম