পাতিহাঁসের কালো ডিম, উৎসুক দর্শকদের ভিড়
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভোলার চরফ্যাশনের আলোচিত সেই পাতিহাঁসটি দ্বিতীয় দিনে আরো একটি কালো ডিম দিয়েছে। এ নিয়ে দুটি কালো ডিম দিয়েছে হাঁসটি। ওই হাস ও ডিম দুটি দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছে উৎসুক দর্শকরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চরফ্যাশনের আবারো একটি কালো ডিম পাড়ে আলোচিত পাতিহাঁস। পর পর দু’দিন এমন ঘটনায় মানুষের মধ্যে কৌতূহলের যেন শেষ নেই।
জানা যায়, পাতিহাঁসটি প্রথম বারের মতো বুধবার কালো ডিম পাড়া শুরু করে। কিন্তু শুক্রবার হাঁসটি ডিম দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, দু’দিন যাবত মানুষের সমাগমে ওই হাঁসের ওপর ধকলের কারণে ওই দিন ডিম দেয়নি।
আশ্চর্যজনক এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী মানুষের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গত তিন দিন যাবত দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে চরফ্যাশনে কালো ডিম দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন।
আলোচিত হাঁসের মালিক আবদুল মতিন বলেন, তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম স্বল্প পরিসরে বাড়িতে হাঁস-মুরগি লালন পালন করে সংসারে বাড়তি আয় করেন। নয় মাস আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে ২১টি ছোট হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করেন। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর ১১টি হাঁস টিকে আছে। তার পালিত ১১টি দেশী হাঁসের মধ্যে ১০ মাস বয়সের একটি পাতিহাঁস বুধবার প্রথম ডিম পাড়ে। ভোরে খোয়ার খুলে হাঁসের ডিমের রঙ কালো দেখে তিনি ভয় পেয়ে যান। বাড়ির উঠানে কালো ডিমটি রাখা হলে মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দেশী হাঁসের কালো ডিম দেখতে বাড়িতে প্রতিবেশীরা ভিড় জমায়।
অস্বাভাবিক এই ডিম নিয়ে ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মণ্ডল বলেন, ’এটি মূলত একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যার বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা প্রযোজ্য নয়। দেশী হাঁস কালো ডিম পাড়া বাংলাদেশে একটি বিরল ঘটনা। ভারতীয় ব্রিডের কালো মাসি জাতের মুরগি কালো ডিম দেয়। কিন্তু কোনো হাঁস কালো ডিম দেয়ার ঘটনা এই প্রথম। বৈজ্ঞানিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে জরায়ুতে কোনো সমস্যার কারণে হাঁসের ডিম কালো হতে পারে। এভাবেই হাঁসটি যদি কালো ডিম পাড়া অব্যাহত রাখে তাহলে হাঁস ও ডিম প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ল্যাবে পরীক্ষাগারে পাঠালে পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।’
ভোলা সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ’ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও কালো জাতীয় কোনো খাবারের কারণে ডিম কালো হতে পারে। এ কারণে হাঁসের ডিমের খোসার কালার কালো হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। আবার অনেক ক্ষেত্রে কালো উদ্ভিদ জাতীয় শেওলা খাবারের কারণে ডিমের রং পরিবর্তন হয়। তবে পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার ঘটনা এই প্রথম।’
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আহাদ বলেন, ‘হাঁসের ডিম সাধারণত সাদা ও হালকা নীল রঙয়ের হয়। কিন্তু পাতিহাঁসের কালো ডিম দেয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। পর পর দু’দিন কালো ডিম দিলেও তৃতীয় দিনে হাঁসটি ডিম দেয়নি। দু’দিন যাবত মানুষের সমাগমে হাঁসটির ওপর ধকলের কারণে ডিম না দেয়ার কারণ হতে পারে। ধকল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হাঁসটি আবার ডিম দেয়া শুরু করতে পারে।’