আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে প্রজাতন্ত্র হতে চায় যে দেশগুলো

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : “আমি বড় হয়েছি ‘গড সেভ দ্য কুইন’ গেয়ে, কিন্তু আজই প্রথম গাইছি ‘গড সেভ দ্য কিং’। রানির জন্য মন খারাপ লাগলেও চার্লসের জন্য আমি গর্বিত,” – বলছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের লিটিয়ানা রাকারাকাতিয়া টার্নার।

তার মত আরো বহু রাজভক্ত অস্ট্রেলিয়ান জড়ো হয়েছিলেন তৃতীয় চার্লসকে রাজা ঘোষণার স্থানীয় অনুষ্ঠানে।

রাজা তৃতীয় চার্লস এখন অস্ট্রেলিয়ারও রাজা এবং রাষ্ট্রপ্রধান। তার মায়ের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সম্পর্কের এক নতুন পরিচ্ছেদের সূচনা হলো।

প্রশ্ন হলো, এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে কেমন থাকবে – বা আদৌ থাকবে কিনা।

কারণ, রাজতন্ত্রের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক মোটেও সহজ-সরল নয়, বরং বেশ জটিল।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু দেশটিতে রিপাবলিক বা প্রজাতন্ত্র ঘোষণার বিতর্ককে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল – একজন কট্টর রিপাবলিকান হলেও – টিভিতে প্রয়াত রানির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার চোখে জল এসে গিয়েছিল। তবে মি. টার্নবুল স্পষ্ট করেই বলেছেন, অস্ট্রেলিয়াকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করার ওপর গণভোট হয়তো শিগগিরই হবে না – কিন্তু একদিন এটা হতেই হবে, এটা অবধারিত।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ বলেছেন, এখন রানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়, কিন্তু কোন এক সময় এ গণভোট হবে।

এ বছরের শুরুর দিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৭০ বছরপূর্তির এক সপ্তাহ আগে অস্ট্রেলিয়ায় একজন “প্রজাতন্ত্র বিষয়ক মন্ত্রী” নিয়োগ করা হয় – যার দায়িত্ব অস্ট্রেলিয়াকে একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করা এবং একজন অস্ট্রেলিয়ানকে রাষ্ট্রপ্রধান করা সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখা।

মনে করা হয়, ২০২৪ বা ২০২৫ সালে অ্যালবানিজ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হলে এ নিয়ে একটি গণভোট হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়াকে প্রজাতন্ত্র করা হবে কিনা – এ প্রশ্নে এর আগে ১৯৯৯ সালে একটি গণভোট হয়েছিল। কিন্তু তাতে বেশির ভাগ অস্ট্রেলিয়ানই রানিকে রাষ্ট্রপ্রধান রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন একটা গুরুতর পার্থক্য ঘটে গেছে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথই ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাথে রাজতন্ত্রের সম্পর্কের সবচেয়ে বড় যোগসূত্র। অনেকে বলেছেন, রানি ছিলেন তাদের পরিবারের সদস্যের মত।

সেই রানিই এখন প্রয়াত । রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্য অনেক অস্ট্রেলিয়ানেরই শুভেচ্ছার অভাব নেই, কিন্তু তাদের “সেন্টিমেন্ট” ঠিক একই রকম নয় – বলছেন বিবিসির সংবাদদাতা শায়মা খলিল।

অস্ট্রেলিয়া্নরা রানিকে যেমন ভালোবাসতেন, তেমনি তাদের স্বাধীন জাতীয় চেতনাও খুব জোরালো। মি. টার্নবুল বলছেন, “রানিকে আমরা ভালোবাসি কিন্তু আমরা একটা স্বাধীন দেশ এবং আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান আমাদেরই একজনের হওয়া উচিত।”

নতুন বাস্তবতা
মি. টার্নবুল একা নন। পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ – যারা একসময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অংশ ছিল – তাদের জনগণের একটা ক্রমবর্ধমান অংশের মধ্যেই কাজ করছে এমন ভাবনা। এসব দেশের অনেক লোকই ব্রিটেনের রাজতন্ত্রকে আর তাদের রাষ্ট্রের শীর্ষে দেখতে চাইছে না।

মাত্র কিছুকাল আগেই বারবাডোজ ব্রিটিশ রাজতন্ত্র এবং ঔপনিবেশিক শাসনের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তারা রানি এলিজাবেথকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে পৃথিবীর নবতম প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

এ ছাড়াও বহুকাল ধরেই প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে আসছেন ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মত আরো কিছু দেশের অনেকে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শুধু ব্রিটেনের রানিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন আরো ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান – যে দেশগুলোর সবই একসময় ছিল ব্রিটেনের উপনিবেশ। কিন্তু নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজত্বকালের বাস্তবতা হয়তো হবে অন্য রকম।

বারবাডোজ প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার পর সংবাদমাধ্যমে বিশ্লেষকরা বলেছেন এটা এক “ডমিনো এফেক্ট” সৃষ্টি করতে পারে – অর্থাৎ অল্প কিছুকালের মধ্যেই হয়তো আরো অনেক দেশই ব্রিটেনের রাজাকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে, বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে।

এমনকি খোদ ব্রিটেনেও এমন লোকের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে – যারা রাজতন্ত্রের বিলোপ চান, যুক্তরাজ্যকে একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করতে চান।

বারবাডোজ কীভাবে প্রজাতন্ত্র হলো
গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বারবাডোজ পৃথিবীর নবতম প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সরিয়ে দেয়। অনুষ্ঠানে রাজকীয় পতাকাকে শেষ বারের মত সালাম দিয়ে তা নামিয়ে বারবাডোজের পতাকা ওড়ানো হয়।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস যুবরাজ চার্লসও এতে যোগ দিয়েছিলেন, আর শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন রানি।

বারবাডোজ ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম দাস কলোনি। ইংলিশ অভিবাসীরা প্রথম ১৬২৭ সালে দ্বীপটি দখল করে এবং ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে এটিকে একটি আখ আবাদ ও চিনি উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করে। এখানে কাজ করার জন্য আফ্রিকা থেকে দাস হিসেবে লোক নিয়ে আসা হয়।

পরে ১৮৩৪ সালে দেশটিতে দাসপ্রথা বিলোপ করা হয়,আর ১৯৬৬ সালে দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। তবে সাংবিধানিক রানি হিসেবে বহাল থাকেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। পরে ১৯৯৮ সালে একটি সাংবিধানিক কমিশন দেশটিকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করার সুপারিশ করে।

ঔপনিবেশিক যুগের অবসান
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অনেক দেশই ঔপনিবেশিক শাসন ও রাজতন্ত্রের সাথে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়, এবং রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে একজন নির্বাচিত ব্যক্তিকে গ্রহণ করে। উপমহাদেশে ভারত ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হলেও প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় ১৯৫০ সালে, পাকিস্তান হয় ১৯৫৬ সালে।

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৯৭০-এর দশকে গায়ানা, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো এবং ডমিনিকা তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে ব্রিটেনের রানিকে সরিয়ে দেয়। এছাড়া ফিজি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় ১৯৮৭ সালে, আর মরিশাস ১৯৯২ সালে।

তবে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল এমন অনেক দেশই প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার পরও কমনওয়েলথ জোট গঠনের মাধ্যমে ব্রিটেনের সাথে সম্পর্ক রেখেছে।

প্রজাতন্ত্র হতে চায় জ্যামাইকাও
রানির মৃত্যুর পর রাজা তৃতীয় চার্লস এখন ক্যারিবিয়ান দেশ জ্যামাইকারও রাজা এবং রাষ্ট্রপ্রধান।

কিন্তু জ্যামাইকাও এ বছরের শুরুতে সেদেশে প্রিন্স উইলিয়ামের সফরের সময় তার ভাষণে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে তারা ঔপনিবেশিক অতীতের সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে চায়, এবং বারবাডোজের মতই একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হতে চায়।

মনে রাখা দরকার, প্রিন্স উইলিয়াম এখন প্রিন্স অব ওয়েলস অর্থাৎ তৃতীয় চার্লসের পর ব্রিটেনের পরবর্তী রাজা হবেন তিনিই। তাকেই জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী এ্যান্ড্রু হোলনেস বলেছেন, “আমরা অতীতকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।”

সম্প্রতিক জরিপগুলোয় দেখা গেছে জ্যামাইকার ৫০ শতাংশ মানুষ এখন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবং রানি এলিজাবেথের মৃত্যু হয়তো এ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে।

জ্যামাইকায় শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য কাজ করছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান দি অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী অধ্যাপক রোজালিয়া হ্যামিলটন বলছেন, “এ নিয়ে কথাবার্তা আবার শুরু হয়েছে। আমরা যতই কথা বলবো, ততই আরো বেশি জ্যামাইকান জেগে উঠবে।

“তারা ইতিহাস থেকে জানতে পারছে – যে ইতিহাস আমাদের স্কুলে পড়ানো হয়তো না, যা আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।”

“জ্যামাইকানদের সামনে প্রশ্নটা খুব পরিষ্কার” – তিনি বলছেন, “আপনি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে এমন একজন রাজাকে চান যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে , দুঃখ প্রকাশ করতে , ক্ষতিপূরণসূচক ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করতে বা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নন?”

রাজা চার্লস জ্যামাইকার কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। তবে তিনি বারবাডোজে গত বছর এক ভাষণের সময় “দাসপ্রথার মর্মান্তিক নৃশংসতার” কথা স্বীকার করেছেন। প্রিন্স উইলিয়াম মার্চ মাসে জ্যামাইকায় এ জন্য “গভীর দুঃখ” প্রকাশ করেন।

জ্যামাইকার সাথে রাজতন্ত্রের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ।

তবে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. হাওয়ার্ড হার্ভে বলছেন, শুধু বারবাডোজ প্রজাতন্ত্র হয়েছে বলেই জ্যামাইকাকে তা করতে হবে ঠিক নয়, তার উচিত হবে নিজেরা গবেষণা করে কিভাবে সামনে এগুনো যায় সে ব্যাপারে জেনেবুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া।

অধ্যাপক রোজালিয়া হ্যামিলটন বলেন, তারা আশা করেন যে শিগগিরই দেশটিকে প্রজাতন্ত্র করার প্রক্রিয়া শুরু হবে ।

বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জেমস ল্যানডেল বলছেন, বিশ্বে এখন “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার” আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এটা দেখার বিষয় হবে যে বারবাডোজের প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার দৃষ্টান্তটি আরো ক্যারিবিয়ান দেশকে এ পথ নিতে উদ্বুদ্ধ করে কিনা।

প্রতিবেদনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রজাতন্ত্র করার সমর্থকদের কথা ছিল। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডেও এমন ভাবনাচিন্তা বাড়ছে।

রানির মৃত্যুর পর আবার জোরদার হয়েছে সেই আলোচনা।

তবে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, তিনি মনে করেন তার জীবদ্দশাতেই নিউজিল্যান্ড একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবে তবে তার দেশ এখনই এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে না।

যুক্তরাজ্যেও রাজতন্ত্রবিরোধীরা
যুক্তরাজ্যে সবশেষ জনমত জরিপে দেখা যায়, ৬১ শতাংশ লোকই এখনো রাজতন্ত্র বহাল রাখার সমর্থক, অন্যদিকে ২৪ শতাংশ চান একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান।

তবে ব্রিটেনের ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়স্কদের মধ্যে এ ব্যাপারে মত পরিবর্তন হচ্ছে বলে দেখা গেছে গত কয়েক বছরে।

এই বয়সের নাগরিকদের ওপর চালানো এক জরিপে ২০১৯ সালে দেখা যায়, ৪৬ শতাংশ ব্রিটেনে একজন রাজা বা রানি থাকার পক্ষে, অন্যদিকে ৩১ শতাংশ চান নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান।

কিন্তু একই বয়সীদের ওপর ২০২১ সালে চালানো জরিপে দেখা যায়, রাজতন্ত্র সমর্থন করেন মাত্র ৩১ শতাংশ এবং ৪১ শতাংশ চান ভোট দিয়ে একজন রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করতে।

এবছরের শুরুর দিকে রানির সিংহাসনে ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার সময় রিপাবলিক নামে একটি রাজতন্ত্রবিরোধী সংগঠন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে বিলবোর্ড লাগিয়ে দেয়। এতে শ্লোগান ছিল “মেক এলিজাবেথ দ্য লাস্ট” – বা ‘এলিজাবেথকে শেষ রানিতে পরিণত করুন।’

এর তীব্র সমালোচনা হয়, তবে রিপাবলিকের প্রধান নির্বাহী গ্রাহাম স্মিথ বলেন, “৭০ বছর এক ব্যক্তির রাষ্ট্রপ্রধান থাকা গণতন্ত্রের জন্য কোন স্বাস্থ্যকর ব্যাপার নয়,” এবং তার মতে ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়া উচিত।

 

সূত্র: বিবিসি

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button