গাজীপুরে ধোঁয়াশায় টিসিবির কার্যক্রম?
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ২০১৭ ও ২০১৮ সালের মতো এ বছরও গাজীপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন জেলার অধিকাংশ ডিলার। এতে আসন্ন রমজানে ন্যায্য মূল্যতে টিসিবির পণ্য কিনতে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন জেলার অগণিত নিম্ন আয়ের মানুষ। গত মঙ্গলবার থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ডিলাররা পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন। তবে এ কর্মসূচির আওতায় গাজীপুরে পণ্য বিক্রি হবে কি না তা টিসিবি জানাতে পারেনি। এ ছাড়া জেলায় টিসিবির ২২ জন ডিলার থাকলেও অধিকাংশ ডিলার ২০১৭ সালের পর চুক্তিপত্র নবায়ন করেননি।
২০১৭ সালের ৩১ মে ‘গাজীপুরে মিলছে না টিসিবির পণ্য, ডিলার থাকলেও কার্যক্রম নেই’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে জেলার টিসিবির ডিলারদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক।
বৈঠকে ডিলাররা টিসিবির কার্যক্রমে নানা অভিযোগ, তাদের লোকসান এবং হয়রানির বিষয়গুলো তুলে ধরেন। পরে জেলা প্রশাসন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ডিলারদের অভিযোগের বিষয়ে জানানো হলেও অচলাবস্থা কাটেনি প্রায় দুই বছরেও।
গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজার এলাকায় মেসার্স আরপি ট্রেডার্সের মালিক রতন জানান, টিসিবি থেকে তার মোবাইল ফোনে এসএমএস এসেছে। টিসিবিতে চাহিদার তুলনায় খুব কম পণ্য পাওয়া যায়। ২০১৭ সালে টিসিবি থেকে নিম্নমানের মসুরের ডাল সরবরাহ করা হয়েছিল। টিসিবির পাঁচ ধরনের পণ্যতে অন্তত একটি পণ্য খারাপ থাকে। এছাড়া পণ্য বিক্রি করতে অন্তত দুইজন সহযোগী প্রয়োজন হয়। পণ্য পরিবহনসহ সব খরচ মিলিয়ে মুনাফা হয় না বললেই চলে।
জয়দেবপুর শহরের মেসার্স মোল্লা অ্যান্ড কোং-এর মালিক আমজাদ হোসেন জানান, ২০১৭ সালে টিসিবি থেকে তিনি পণ্য উত্তোলন করেছিলেন তিনি। তবে নিম্নমানের মসুরের ডাল এবং লাল চিনি বিক্রি করতে তাকে বেগ পেতে হয়েছে। ওই বছরে তার লোকসানও হয়েছে। এ কারণে এ বছরে তিনি আর পণ্য উত্তোলন করবেন না। জয়দেবপুর শহরের মোসার্স পাল অ্যান্ড সন্সের সুশীল পাল জানান, তিনি এ বছরে টিসিবি থেকে পণ্য উত্তোলন করবেন না।
টিসিবির তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, গাজীপুরের ডিলাররা টিসিবি থেকে পণ্য উত্তোলন করেছে কি না তিনি জানেন না। এ ছাড়া ডিলাররা সহজেই চুক্তিপত্র নবায়ন করতে পারবেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, বিগত দিনে টিসিবির ডিলারদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কয়েকজন ডিলারশিপ সমর্পন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পরবর্তীতে যথাযথ নিয়মে নতুন ডিলার দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হলেও জেলায় টিসিবি কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া গাজীপুরে টিসিবির কার্যক্রম সফল করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।