অর্থনীতিআলোচিতজাতীয়

বিধিনিষেধ: পূর্বাচলে শুরু হওয়া ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা’ নিয়ে সংশয়!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১১ দফা নতুন বিধিনিষেধ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে।

এ অবস্থায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চালু থাকবে কিনা এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ নিয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসতে পারে সরকারের পক্ষ থেকে।

উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত বছর বন্ধ ছিল বাণিজ্যমেলা। এ বছর ১লা জানুয়ারি থেকে পূর্বাচলের নতুন ভেন্যুতে মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। মেয়াদের এক-তৃতীয়াংশ গড়াতেই এটির ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বাণিজ্যমেলায় প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম হচ্ছে।

সামনের দিনগুলোতে তা আরও কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলে আশা করছে আয়োজকরা। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি মেলার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে বরাবরই উপেক্ষিত থাকে।

মেলার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বাণিজ্য মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিধিনিষেধে বাণিজ্যমেলা চলবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে, সেভাবেই আমরা তা বাস্তবায়ন করব।

বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাণিজ্যমেলার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এটা দেখেশুনে, বুঝে মেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এবারই প্রথম পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে। নতুন ভেন্যু হওয়ায় এখনও সেভাবে জমে ওঠেনি মেলা। এ অবস্থায় মেলা বন্ধ হলে আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন স্টল মালিকরা।

১১ দফা বিধিনিষেধ:

১. দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

৩. রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

৪. ১২ বছরের ঊর্ধ্বের সব ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

৫. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টসমূহে ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও আগত ট্রাকের সঙ্গে শুধুমাত্র ড্রাইভার থাকতে পারবে। কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

৬. ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে।

৭. বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ টিকা সনদ প্রদর্শন ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

৯. সর্বসাধারণের করোনার টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ নেবে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেবে।

১০. কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

১১. কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

এই বিধিনিষেধ কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button