জেতা ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশর
গাজীপুর কণ্ঠ, খেলাধুলা ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগের কোনও আসরেই মূল পর্বে জয় নেই বাংলাদেশের। সুপার টুয়েলভে আজ সুযোগ ছিল সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার। কিন্তু তীরে এসে তরী ডোবার চিরচেনা নজিরই স্থাপন করলো মাহমুদউল্লাহর দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছে ৩ রানে! তাতে পরবর্তী রাউন্ডের আশা কার্যত শেষ মাহমুদউল্লাহদের। বাংলাদেশ ১৪৩ রানের লক্ষ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৩৯ রান।
অথচ শুরুতে ভালো কিছুর বার্তা দেওয়ার চেষ্টায় ছিল বাংলাদেশ। ভাগ্য ফেরাতে ওপেনিংয়ে নামেন সাকিব আল হাসানও। তাও আবার ক্যারিয়ারের প্রথমবার! কিন্তু সুপার টুয়েলভে অভিষেক ওপেনিংয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ফেরেন মাত্র ৯ রানে।
সাকিব-নাঈম অবশ্য শুরুতে দেখে শুনেই খেলছিলেন। রান তুলছিলেন স্কোরবোর্ডে নজর রেখে। ৪ ওভারে তোলেন ২০ রান। বিপদ ঘটে পঞ্চম ওভারে। আন্দ্রে রাসেলের বোলিংয়ে দ্বিতীয় বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন নাঈম, কিন্তু মিডউইকেটে তার ক্যাচ নিতে পারেননি হেইডেন ওয়ালশ। তবে পরের বলে ঠিকই তুলে নিয়েছেন সাকিবের উইকেট। মেরে খেলতে গিয়েছিলেন। ফলাফল স্লো পিচে বল ঠিকমতো ব্যাটে না আসায় লিডিং এজ হয়ে তিনি ৯ রানে জমা পড়েন হোল্ডারের হাতে।
পরের ওভারে জেসন হোল্ডারের বল টেনে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন নাঈম। এই ওপেনার ফেরেন ১৯ বলে ১৭ রানে। তাদের বিদায়ে রানের গতি যায় কমে। পাওয়ার প্লেতে আসে ২৯ রান। কিন্তু রানের চাহিদা মেটাতে জুটি গড়ে খেলতে থাকেন লিটন ও সৌম্য সরকার। মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভাঙেন বামহাতি স্পিনার আকিল হোসেন। ১৩ বলে ১৭ রান করা সৌম্যকে গেইলের ক্যাচ বানিয়েছেন।
লিটন তখনও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন। মূলত তার দায়িত্বশীল ইনিংসেই জয়ের স্বপ্ন বেঁচে থাকে শেষ পর্যন্ত। এই সময়ে মুশফিকুর রহিম ট্রেড মার্ক স্কুপে বোল্ড না হলে ম্যাচের পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও হতে পারতো! কারণ, তার বিদায়েই চাপটা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায় দলে। তার পরেও জয়ের সম্ভাবনায় শেষ ওভারে ম্যাচ টিকে থাকে লিটন-মাহমুদউল্লাহর কল্যাণেই। লিটন ১৯তম ওভারের শেষ বলে ফিরলে ম্যাচ গিয়ে দাঁড়ায় টান টান উত্তেজনায়। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৩ রান। কিন্তু টান টান সেই মুহূর্ত সামাল দিতে ব্যর্থ হন মাহমুদউল্লাহ। এই ওভারে আসে ৯ রান। তাতেই ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায় মাহমুদউল্লাহদের। ফলাফল ৫ উইকেটে ১৩৯ রানে থামে বাংলাদেশ! মাহমুদউল্লাহ ২৪ বলে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আফিফ (২*)।
ক্যারিবীয়দের হয়ে একটি করে উইকেট নেন রবি রামপল, জেসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেল, আকিল হোসেন ও ডোয়াইন ব্রাভো।
এর আগে টস হেরে শেষের ঝড়ে ৭ উইকেটে ১৪২ রান করেছে ক্যারিবিয়ানরা। শেষ ৫ ওভারে আসে ৫৮ রান! মাত্র ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়েও তারা সমৃদ্ধ স্কোরবোর্ড পায় নিকোলাস পুরানের কারণে। ২২ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪০ রানের ইনিংসের খেলেছেন। ম্যাচসেরাও হন তিনি। শেষ দিকে জেসন হোল্ডারের ৫ বলে ২ ছক্কায় খেলা হার না মানা ১৫ রানেরও ভূমিকা ছিল। সঙ্গে কৃতিত্ব পাবেন রোস্টন চেজ। আক্রমণাত্মক নয় বরং ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেছেন। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ৪৬ বলে মাত্র ২ বাউন্ডারিতে ৩৯ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেছেন তিনি।
কাইরন পোলার্ড স্বেচ্ছায় মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন। পরে ফিরে এসে ইনিংসের শেষ বলে মেরেছেন ছক্কা। ওই ছক্কায় ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে অপরাজিত ১৪ রান। তাতেই ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ শেষ দিকে বেড়েছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি পেসার ৪ ওভারে মাত্র ২০ রানে নেন ২ উইকেট। শেখ মেহেদী হাসানও দুর্দান্ত। ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় তার শিকারও ২ উইকট। তাদের মতো ২ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তবে ৪ ওভারে তার খরচ ৪৩ রান।