কালীগঞ্জে ইজিবাইক চালককে গলাকেটে হত্যায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কালীগঞ্জে পূর্বাচল উপ-শহরের ২৬ নাম্বার সেক্টরে ইজিবাইক চালক মো. সাইফুল ইসলামকে (২৬) গলাকেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচনও হত্যায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। ইজিবাইকটি ছিনতাই করতেই চালককে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে বাহিনীটি।
রোববার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে চারটায় রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিতসংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতাতরা হলেন- গাজীপুরেরে আজাহার উদ্দিনের ছেলে আজিজুল ইসলাম (১৮) ও মোঃ সমর আলীর ছেলে মোঃ আরজু মিয়া (৩৩)। এছাড়াও ঢাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ইমন খান (১৯), সাত্তার হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয় প্রকাশ মাসুম (১৮), জয়নাল আবেদীনের ছেলে বিজয় আহম্মেদ (১৯) এবং মৃত আপিল উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন (৩০)।
নিহত সাইফুল শেরপুরের শ্রীবর্দী থানার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি উত্তরখান এলাকায় ভাড়া থেকে ইজিবাইক চালাতেন।
সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দল্লাহ আল মোমেন বলেন, গত ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে কালীগঞ্জ থানার পূর্বাচল উপশহরের ২৬ নম্বর সেক্টরের ২০২ নম্বর সড়কের ৫৮ নম্বর ব্রিজের ১০০ গজ দক্ষিণে ফাঁকা জায়গায় রাস্তার ওপর সাইফুল ইসলামকে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারী ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলা ও পেটে জখম করে। এরপর তারা সাইফুলের ইজিবাইক ও ব্যবহৃত মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন সাইফুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কাছের হাসপাতালে পাঠান। তবে, পথিমধ্যেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. শাহ আলম ১৬ অক্টোবর বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন {মামলা নম্বর-০৫(১০)২১}। এরপর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-১।
লে. কর্নেল আব্দল্লাহ আল মোমেন বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে র্যাব-১ এর দল ঢাকার উত্তরখান ও পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যায় জড়িত আজিজুল ইসলাম, মো. ইমন খান, মো. মেহেদী হাসান হৃদয় ওরফে মাসুম, বিজয় আহম্মেদ, আলাউদ্দিন এবং মো. আরজু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, গত ১৫ অক্টোবর বিকালে গ্রেফতার আসামি মো. আজিজুল ইসলাম, ইমন ও পলাতক আসামি জুয়েল অটোরিক্সা চালকের হাত-পা বেঁধে ও মুখে কচটেপ লাগিয়ে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগী বিজয় ও হৃদয় ওরফে মাসুমকে ফোন করে উত্তরখান থানার ময়নারটেক এলাকায় আসতে বলেন। পরবর্তীতে তারা একত্রিত হয়ে ময়নারটেক থেকে হরদি যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলামের ইজিবাইক ২০০ টাকায় ভাড়া করেন।
র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, ইজিবাইকটি ঘটনাস্থল পূর্বাচল উপশহরের ২৬ নম্বর সেক্টরের ২০২নম্বর সড়কের ৫৮ নম্বর ব্রিজ থেকে ১০০ গজ দক্ষিণে ফাঁকা জায়গায় রাস্তার ওপর পৌঁছামাত্র জুয়েল তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে ইজিবাইক চালক সাইফুল ইসলামের গলায় পোচ দেন। এতে তিনি নিচে পড়ে যান। পরবর্তীতে আজিজুল তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে এবং ইমন জুয়েলের ছুরি নিয়ে সাইফুলের শরীরের পেছনে দুইটি করে পোচ দেন। এতে সাইফুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন জুয়েল ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। আর ইমন অটো রিকশাটি চালিয়ে পূবাইল মিরের বাজারে দিকে পালিয়ে যান।
গ্রেফতারদের বরাত দিয়ে লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের সদস্য ১০ থেকে ১২ জন। আটক আলাউদ্দিন এই ছিনতাই চক্রের মূল হোতা। তিনি এই ছিনতাই চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন।
আরো জানতে……
কালীগঞ্জে চালককে হত্যা করে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের রহস্য উম্মোচন: গ্রেপ্তার তিন