বিদেশগামীর ‘সর্বস্ব’ লুটে নেয়ার ঘটনায় সিআইডি’র এসআই গ্রেপ্তার!
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : গত বছরের ১৯ আগস্ট বিদেশগামী এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে ‘সর্বস্ব লুটে নেওয়া’ সিআইডির সেই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ- ডিবি। আকসাদুদ জামান নামের ওই কর্মকর্তা সিআইডির মেট্রো (পূর্ব) বিভাগে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লুটের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রংপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের বিমানবন্দর জোনাল টিম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া শাখা থেকে এ সংক্রান্ত ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করার তথ্য জানিয়েছেন।
গত বছরের ১৯ আগস্ট রাজধানীর টিকাটুলী থেকে সিএনজিযোগে বিমাবন্দর যাচ্ছিলেন মাদারীপুরের বাসিন্দা রোমান নামে এক ব্যক্তি। তাকে অনুসরণ করে বিমানবন্দরের আগে কাউলা এলাকায় বেরিকেড দিয়ে তাকে বেধরক মারধর করে লাগেজসহ গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। পরে তাকে গাড়িতে তুলে হাতে হাতকড়া পরানো হয় এবং তার কাছ থেকে নগদ অর্থ লুটে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২০ আগস্ট বিমানবন্দর থানায় রোমান নিজেই বাদী হয়ে একটি দস্যুতার মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বিমানবন্দর জোনাল টিম। সড়কে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে এই চক্রটির সঙ্গে সিআইডির একজন উপ-পরিদর্শক জড়িত। আকসাদুর জামান নামে ওই উপ-পরিদর্শক সিআইডির অফিসিয়াল গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ১৯-২২৩৭) নিয়ে ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা পুরো বিষয়টি জানার পরও আকসাদুদ জামানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়নি। তবে বিষয়টি জানিয়ে সিআইডিতে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
এক বছর আগের এই ঘটনাটি সম্প্রতি ফের আলোচনায় আসে আকসাদুদের স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে ডিবির বিমানবন্দর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কায়সার রিজভি কোরায়সির একটি ফোনালাপ ফাঁসের মাধ্যমে। আকসাদুদ জামান ডিবির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন। ওই ফোনালাপে তাহমিনা আক্তার ‘ডিবির কর্মকর্তাকে দেওয়া ওই টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন।
ফোনালাপে ডিবির কর্মকর্তা ওই টাকা ‘স্যারেরা’ নিয়েছেন জানিয়ে তাহমিনাকে অফিসে ও সাক্ষাতে কথা বলতে বলেন। তিনি ‘স্যারদের’ বলে কিছু টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা এডিসি কায়সার রিজভি কোরায়সি ফোনালাপ ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ফোনালাপটি ‘টেম্পারড ও ফেব্রিকেটেড’ করার দাবি করেছেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন