গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তারা মারা যান বলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান।
এদের মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়জন ও নাটোরের একজন।
ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, মৃত ১৫ জনের মধ্যে সাতজন করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মারা যান। বাকিরা মারা যান নমুনা পরীক্ষার আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। শনাক্ত হওয়া সাতজনের মধ্যে রাজশাহীর চারজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুইজন ও নাটোরের একজন।
গত ১১দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ১১ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) রাজশাহী হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১০৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ জনই মারা গেছেন করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর; বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন ৪৩ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ২২, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১১, নওগাঁ সাত, নাটোর একজন, পাবনা একজন ও মেহেরপুর একজন। একই সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ জন।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৭১ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে রোগি ভর্তি রয়েছেন ২৯৭ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৪২, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১১০, নওগাঁর ২৪, নাটোরের ১৫, পাবনার ৩, কুষ্টিয়ার ৩ জন। আইসিইউতে ১৮ জন ভর্তি রয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
কমেছে শনাক্ত
রাজশাহীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে জানিয়ে ডা. সাইফুল বলেন, বৃহস্পতিবার রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে মোট ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস পজেটিভ এসেছে ২৩৭ জনের। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪৩ জনের পজেটিভ এসেছে।
রাতে দুইটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, আগের দিনের চেয়ে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার হয়েছে ৩৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এছাড়াও নাটোরের ৭৩ নমুনায় ৪৪ জন, নওগাঁর ৪২ নমুনায় ২১ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭৪ নমুনা পরীক্ষায় ২৯ জনের করোনাভাইরাস পজেটিভ এসেছে।
৭ দিনের লকডাউন
করোনাভাইরাসে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহীতে সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজশাহী সার্কেট হাউসে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে এ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে এ বিষয়ে ব্রিফ করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর।
তিনি বলেন, জেলায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ও মৃত্যু হার বিশ্লেষণ করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লকডাউনের সময় ট্রেনসহ সব বন্ধ থাকবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ থেকে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না, রাজশাহী থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যাবে না। তবে রোগী ও অন্য জরুরি সেবাদানকারীর ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।