ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনায় প্রত্যাহারের পর সাসপেন্ড পুলিশের সেই দুই কর্মকর্তা
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনায় কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম ও কটিয়াদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তাদের প্রাথমিকভাবে দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়। এর আগে নির্বাচনে অনিয়মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় তাদের প্রত্যাহার করা হয়।
গত ২৪ মার্চ পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কটিয়াদী উপজেলা ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে আগের রাতে ঢালাওভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ব্যালটে সিল মারা হয়। বিষয়টি অবগত হওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি দায়িত্বপ্রাপ্ত এ দুই কর্মকর্তা।
বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে এ দুই কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে প্রত্যাহার করা হয়। সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও কিছুক্ষণ পর সকাল ১০টার দিকে স্থগিত করে দেয়া হয় কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ।
একই দিন কিশোরগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. তাজুল ইসলাম প্রাথমিক তদন্তে ৮টি কেন্দ্রে রাতের বেলা ব্যালটে সিল মারা হয়েছে বলে প্রমাণ পান। এদিন নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এরপরই গত ২৮ মার্চ অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে চাকরিবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত এবং চাকরিবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে প্রত্যাহারের আদেশপ্রাপ্ত কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলামকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত এবং চাকরিবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণের বিষয়টি জানানো হয়েছে। একই দিন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবরে একটি পত্র দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মো. সাবেদ উর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে প্রত্যাহারের আদেশপ্রাপ্ত কটিয়াদী থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীনকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত এবং চাকরিবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবরে একটি পত্র দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র জানায়, ২৪ মার্চ নির্বাচনের আগের রাতে ৪০-৫০ জনের মুখোশধারী ও মোটরসাইকেল আরোহী একদল দুর্বৃত্ত বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হামলা করে। তারা দেশীয় অস্ত্রের মুখে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নৌকার ব্যালটে সিল মারে। সার্বিক ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম কাজ করছে বলে জানা গেছে।