কালীগঞ্জে ছাগল জবাই করায় পিটিয়ে হত্যা, ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে’ আসামিরা!
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কালীগঞ্জে খেতের ফসল (সবজি) নষ্ট করায় ছাগল জবাই করে খেয়ে ফেলায় আজিজুর রহমান খান (৩৫) এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলার তদন্তে উল্লেখ্যযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে জড়িত সকল আসামি। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
”তবে দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে জানিয়েছে পুলিশ।”
আসামি গ্রেপ্তার ও তদন্তের ধীর গতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী আজিজুর রহমানের স্ত্রী আছমা আক্তার। স্বামীকে হারিয়ে তিন সন্তানকে নিয়ে চরম কষ্টে রয়েছেন তিনি। বর্তমানে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার চলে গেছেন আছমা আক্তার।
মামলাটি তদন্ত করছেন কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল (বুধবার) বেলা ১১টার দিকে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের রয়েন গ্রামে আজিজুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত আজিজুর রহমান খান জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের রয়েন গ্রামের মৃত আবুল হাশেম খানের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ”গত ১৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুরের দিকে প্রতিবেশী আজাহারের ছাগল আজিজুর রহমানের চাষ করা ফসলি (সবজি) খেতে ঢুকে পড়ে এবং কিছু সবজি খেয়ে নষ্ট করে ছগলটি। এরপর সেই ছাগলটিকে জবাই করে ওইদিন রাতেই জবাই করে বন্ধুদের নিয়ে খেয়ে ফেলে আজিজুর। এরপর ১৪ এপ্রিল (বুধবার) বেলা এগারোটার দিকে সে তার বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় যাওয়ার পর ওই ঘটনার জেরে ছাগলের মলিকপক্ষ আজাহারে ছেলে মুস্তাক খাঁনসহ কাউসার, ফয়সাল, নুর নাহার, তানভির এবং করিম পাঠানসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন মিলে পরিকল্পিতভাবে আজিজুরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেল পৌণে চারটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৫ এপ্রিল রয়েন গ্রামের আজাহারের ছেলে মুস্তাক খাঁন (২৪), খলাপাড়া এলাকার করিম পাঠানের ছেলে কাউসার (২৪), ফয়সাল (৩২), রয়েন গ্রামের আজাহারের স্ত্রী নুর নাহার (৫৫), একই এলাকার তানভির (১৬) এবং খলাপাড়া এলাকার করিম পাঠানসহ (৬৫) অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে অভিযুক্ত করে কালীগঞ্জে থানায় মামলা করেন নিহত আজিজুর রহমানের স্ত্রী আছমা আক্তার {মামলা নাম্বার ১০(৪)২১}।
আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে নিহতের স্বজনরা ও আছমা আক্তার বলেন, ”মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামী গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ আমাদের জানিয়েছে।”
স্বামী হারিয়ে মানসিক যন্ত্রণার পাশাপাশি চরম কষ্টে রয়েছেন জানিয়ে আছমা আক্তার বলেন, ”হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৫ এপ্রিল মামলা দায়ের করেছি। এক সপ্তাহ পার হলেও কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। স্বামীকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে চরম কষ্টে রয়েছি। গত শনিবার স্বামীর বাড়ি থেকে আমার এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি নরসিংদীর শিবপুরে চলে এসেছি। বর্তমানে বাবার বাড়িতেই রয়েছি।”
”স্বামী হত্যায় জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের বিচারের দাবি জানান তিনি।”
বুধবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, ”হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সকলেই পলাতক রয়েছে। মামলায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে নিয়মিত বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। আসামিদের আইনের আওতায় আনতে যা যা করা দরকার তা সবই করছি।”
আরো জানতে…
কালীগঞ্জে খেতের ‘ফসল নষ্ট’ করায় ছাগল জবাই, পিটিয়ে যুবককে হত্যা!