করোনার টিকা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপে টিকার ঘাটতি নিয়ে ক্ষোভ সত্ত্বেও অনেক মানুষ সুযোগ পেয়েও টিকা নিতে নারাজ। অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকার ভাবমূর্তির সমস্যার কারণে টিকাদান কর্মসূচি সংকটের মুখে পড়ছে।
টিকা কেনা ও বণ্টনের ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার অভিযোগের মুখে পড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সমালোচকদের মতে, ব্রাসেলস ঠিক সময়ে, সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ও যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিলে আজ এমন ঘাটতি দেখা যেত না। সেই সঙ্গে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ যে টিকা হাতে এসে গেছে, সেগুলিও অনেক ক্ষেত্রে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। তার উপর নানা কারণে অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানির টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ও সংশয়ের ফলে অনেক মানুষ সুযোগ পেয়েও সেই টিকা নিতে অস্বীকার করছেন।
জার্মানি ও ফ্রান্স অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকার নেতিবাচক ভাবমূর্তি দূর করে মানুষকে সেটির কার্যকরিতা বোঝানোর চেষ্টা করছে। দুই দেশের সরকারই বার বার আশ্বাস দিচ্ছে, যে ফাইজার-বায়োনটেক ও মডার্না কোম্পানির টিকার মতোই অ্যাস্ট্রাজেনিকা অত্যন্ত কার্যকর। ফ্রান্সে কোনো জটিলতা ছাড়াই সরাসরি ডাক্তারের চেম্বারে এই টিকা দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত দেওয়া প্রায় ১৭ লাখ টিকার মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনিকার অনুপাত ছিল মাত্র ২৭৩,০০০। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার থেকে এমনকি ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের জন্যও অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকার ছাড়পত্র দিচ্ছে। সংশয় কাটাতে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পেশায় ডাক্তার ওলিভিয়ে ভেরঁ টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে এই টিকা নিয়েছেন।
জার্মানিতে টিকা সংকট কাটাতে সব মানুষের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকা নেবার সুযোগ দেবার প্রস্তাব শোনা যাচ্ছে। মহামারির সময় মূল্যবান টিকা ফেলে না রেখে দ্রুত বণ্টনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ২৩শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪ কোটি ৫০ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকা সরবরাহ করা সত্ত্বেও মাত্র ২৪০,০০০ মানুষকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আপাতত প্রাইমারি স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষাকর্মীদের আরও দ্রুত টিকা দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকার প্রশংসা করে সেটির প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন। তবে বয়সের কারণে তিনি নিজে সেই টিকা নিতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন। তবে ফ্রান্সের পর জার্মানিও সম্ভবত বেশি বয়সের মানুষের জন্যও অ্যাস্ট্রাজেনিকা নিরাপদ বলে ঘোষণা করতে চলেছে। আপাতত শুধু ৬৫ বছর পর্যন্ত সেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
টিকার সরবরাহ ও বণ্টনের সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশে দ্রুত করোনা পরীক্ষার সুযোগও বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন শিথিল করার জন্য চাপের মুখে পড়ছে কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা ভাইরাসের আরও ছোঁয়াচে সংস্করণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় সরকার ও প্রশাসন এখনই সব বাধানিষেধ তুলে নিতে চাইছে না। সে ক্ষেত্রে দৈনিক সংক্রমণের হার আবার দ্রুত বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর চ্যান্সেলর ম্যার্কেল পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।