গাজীপুর

গাজীপুরে ১৯ দিনে বিএনপির নেতাকর্মীর নামে ১১ মাদক মামলা!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : গাজীপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানির উদ্দেশ্যে মাদকসংক্রান্ত মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৯ দিনে শুধু জয়দেবপুর থানায় দায়ের হয়েছে ১১টি মামলা। আর তাতে আসামি তালিকায় দেখা গেছে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীর নাম। এ নিয়ে ক্ষোভসহ জোর গুঞ্জন চলছে।

এছাড়াও নরওয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি ড. মো. নুরুল ইসলাম শেখকে কেন এবং কীভাবে মাদকের (ইয়াবা) মামলায় আসামি করা হয়েছে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে এই ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে, এ ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ড. মো. নুরুল ইসলাম শেখকে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন আদালত।

গত ০৭ ডিসেম্বর বুধবার ভুক্তভোগাী ড. মো. নুরুল ইসলাম শেখকে জামিন দিয়ে এসপির প্রতি এই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ বলেন, ‘এ ধরনের মামলার কথা জানা নেই। তবে মামলা হলে তদন্ত ও ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হবে। জড়িত না হলে কাউকে হয়রানি করা হবে না। সে ক্ষেত্রে এজাহারে নাম থাকলেও অভিযোগপত্র থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকেই হয়রানি বা আসামি করছে না।’

এদিকে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে রাখতেই এসব মামলা দেওয়া হচ্ছে। আসামি তালিকায় রয়েছেন সদর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন রিজভী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি নাজমুল হক, মির্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা যুবদলের আসাদুজ্জামান হারুন, হাজি আরিফ, আজিজুল হক সিনহা, ছাত্রদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। তাঁদের অনেকে আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র কমিটিতে আছেন। আর মাদকসংক্রান্ত মামলাগুলোর এজাহার প্রায় অভিন্ন। পুলিশ সেখানে দাবি করেছে, মাদকসহ আসামি ধরা হলে কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়। আর পালিয়ে যাওয়া এসব সহযোগী হিসেবেই দেওয়া হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীর নাম।

জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, ‘প্রতিটি থানায় গোপনে মাদক মামলা দেওয়া হচ্ছে। ভোটের মাঠ থেকে বিএনপিকে বিতাড়নের কৌশল হিসেবেই পুলিশ এসব মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। এর আগে গায়েবি মামলা দিলে সেগুলোর আসামিরা দেড় মাসের বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন। এ অবস্থায় মাদক মামলা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।’

বিএনপি নেতারা জানান, গত ২৯ নভেম্বর জয়দেবপুর থানার এএসআই খালেকুজ্জামান বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয় রাকিব ও রাসেল নামের দুজনকে। এ সময় মোনায়েম, মাজাহারুল ইসলাম, শামসুল হক ও ওসমান গণি নামে চার গাঁজা ব্যবসায়ী পালিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। আসামি মোনায়েম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি। মাজাহারুল পিরুজালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, শামসুল হক একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আর বিএনপি নেতা ওসমান গণি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী ছিলেন। প্রায় অভিন্ন অভিযোগে গত ২৮ নভেম্বর কাপাসিয়া থানায় মাদক মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ হোসেন লিয়নকে।

এছাড়াও ০৭ নভেম্বর কালগীঞ্জ থানায় শেখ রাজু নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে চাঁদাদাবীর অভিযোগে বিএনপির ২৭ নেতা-কর্মীর নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামায় জেল হাজতে থাকা একজনকে আসামী করা হয়েছে।

গাজীপুর জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স জানান, গোপনে মাদক মামলা দেওয়া হচ্ছে। গত ১৫ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু জয়দেবপুর থানায় এ রকম ১১টি মামলা দায়ের হয়েছে, যার আসামি বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী।

 

আরও পড়ুন…

প্রবাসীর বিরুদ্ধে মাদকের মামলা : গাজীপুরের এসপির ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট

 

 

তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button