গাজীপুর

পূবাইলে স্বামী-স্ত্রী হত্যা: রহস্য উন্মোচন করলো পিবিআই, গ্রেপ্তার ১

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : পূবাইলের বসুগাঁও এলাকায় জমি বিক্রির জের থেকেই ১ বছর ৫ দিন আগে নিজ বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে গ্রেপ্তার আসামি মোহাম্মদ পলাশ।

বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গ্রেপ্তার পলাশ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

এর আগে পূবাইলের সাপমারা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর গাজীপুর জেলা শাখার সদস্যরা।

আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের পর শুক্রবার (০২ অক্টোবর) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর গাজীপুর জেলা শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নিহতরা হলো, পূবাইলের বসুগাঁও এলাকার মৃত তারা মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৪০) ও তার স্ত্রী পুতুল বেগম (২৮)।

গ্রেপ্তার মোহাম্মদ পলাশ পূবাইলের সাপমারা এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে এবং নিহত আবুল কালামের আপন বোনের মেয়ের  (ভাগ্নে) স্বামী।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে মহানগরের পূবাইলের বসুগাও এলাকায় নিজ বাড়িতে ঘরের ভেতরে অজ্ঞাত আসামিরা আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সকালে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পরে ওইদিনই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আবুল কালামের বোন মোসা. হেলেনা (৪২) বাদী হয়ে জিএমপি’র পূবাইল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ২৪(৯)১৯)।

পিবিআই জানায়, হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর গাজীপুর জেলা শাখায়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই’র গাজীপুর জেলা শাখার পুলিশ পরিদর্শক হাফিজুর রহমান।

এরপর তদন্ত শুরু করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং আসামি গ্রেপ্তারে নিহতদের ব‍্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও আত্মীয়-স্বজনের বিষয়ে তদন্ত করেন পরিদর্শক হাফিজুর রহমান।

হত্যাকাণ্ডের ১ বছর ৫ দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) রাত সাড়ে চারটার দিকে পূবাইলের সাপমারা এলাকা থেকে নিহত আবুল কালামের বোনের মেয়ের (ভাগ্নে) স্বামী মোহাম্মদ পলাশকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই’র কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তার পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে এবং জড়িত অন্য আসামিদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানায়। পরবর্তীতে তাকে আদালতে পাঠানো হলে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় পলাশ।

পিবিআই আরো জানায়, আসামি দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হলো পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আদালতে দেওয়া পলাশের জবানবন্দির বরাদ দিয়ে পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার পলাশ তার শ্বাশুড়ীর পৈতৃক সম্পত্তিতে থাকা ঘর ও জমি তার মামা শ্বশুর নিহত আবুল কালাম ও খালা শাশুড়ি হত্যা মামলার বাদী মোসাম্মৎ হেলেনা বিক্রির জন্য বায়না করে। পরবর্তীতে যাতে ওই জমি বায়নাকৃত ক্রয়কারী রেজিস্ট্রি করতে না পারে এজন্যই পলাশ তার সহযোগীদের নিয়ে আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে সুকৌশলে রাতের বেলায় ঘুমন্ত অবস্থা থেকে ডেকে উঠায় এবং ঘুম থেকে উঠে আবুল কালাম দরজা খোলার পর তাদের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ২ বছরের শিশু সন্তানের সামনে ধারালো চাপাতি দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে নির্মমভাবে হত্যা করে’।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও পিবিআই জানায়।

 

 

আরো জানতে…

পূবাইলের বসুগাঁও এলাকায় স্বামী ও স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button