সংসদ নির্বাচন: সাধারণ মানুষের আগ্রহ কেমন?
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। হাতে বাকি আর মাত্র ২৩ দিন।
এরইমধ্যে মাঠে, ময়দানে, চায়ের দোকান বা পাড়ার আড্ডা সব জায়গাতেই প্রাধান্য পাচ্ছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা।
প্রায় দশ বছর পর আবার সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে – তাই একে ঘিরে মানুষের আগ্রহ বা উদ্দীপনার কোন কমতি নেই।
নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের এই আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম মিরপুরের উচ্চমধ্যবিত্ত একটি পরিবারে।
সেখানে বাড়ির কর্ত্রী নূর আক্তার জুবেয়দা জানান নির্বাচনকে ঘিরে তার আগ্রহের কথা।
তিনি বলেন, “এবারে দেখছি বড় দলগুলো ইলেকশনে আসছে। যখন শক্ত প্রতিপক্ষ থাকে তখন ইলেকশনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। এবারে সেই ব্যাপারটা আছে।”
এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকার কারণে নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশা করেন তিনি।
মিসেস জুবেয়দা বলেন, “আমি সব সময় চাই নির্বাচনটা সুষ্ঠু হোক। আমি যাকে চাই, সেটা কোন প্রতীক হোক বা প্রার্থী হোক, যাই হোক, আমি যেন আমার ভোটটা দিতে পারি।”
একই প্রত্যাশা তার পুত্রবধূ শারমিন রহমান শর্মীর। এবারের নির্বাচনে সব দল ও মতের মানুষ তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
মিসেস রহমান বলেন, “গতবার যেটা ছিল যে একটা প্রধান দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই। নির্বাচনটা অনেকটা একপেশে হয়ে গিয়েছিল। সবাই নিজের মতামত সেবার প্রকাশ করতে পারে নাই।”
এবার যেহেতু প্রধান দুই দল অংশগ্রহণ করছে তাই এই নির্বাচনে তার পরিবারের সবার যথেষ্ট উদ্দীপনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
গতবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন শারমিন রহমান তবে বনানীর টিএন্ডটি কলোনি বস্তির বাসিন্দা আসমা বেগমের সেই নির্বাচনে অংশ নেয়া হয়নি।
তবে এবারে ভোট দেয়ার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী তিনি। বস্তির অলিগলি ঘুরতে ঘুরতে আসমা বেগম সে কথাই জানান।
“পাঁচ বছর আগের নির্বাচনে তো আমরা কোন ভোট দিতে পারি নাই। এবার দিচ্ছি কারণ দুই দল একত্র হইসে। দুই দল মিইল্যা যদি সুস্থ নির্বাচন করে, তাইলে তো এইটা দেশের জন্যই ভাল।”
নির্বাচন কমিশন প্রতিবারের মতো এবারও সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার প্রতি আস্থা রাখার কথাও জানান আসমা বেগম।
এ নিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ওপর আমরা ভরসা রাখি। আমরা টিভি মিভি পেপার পত্রিকাতে দেখি, সিইসি বলে যে এবার সুস্থ নির্বাচনই হবে। মোটকথা আমরা নির্বাচন চাই। আমরা আমাদের ভোট দেব, যাকে চাই তাকে দেব।”
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজের এই ভোটাধিকার প্রয়োগকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন আসমা বেগম। তিনি আমাকে জানান,
“আমার একটা ভোটের কারণে একটা দল জিততেও পারে আবার না দেয়ার কারণে হারতেও পারে। তাই আমি আমার ভোটটা দিব। এটা আমার অধিকার।”
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৪২ লাখ। যা গতবারের চাইতে প্রায় ১ কোটি বেশি।
তবে এবারের নির্বাচনে কোন অবস্থাতেই যেন সহিংসতা না ছড়ায়। সবাই যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারেন – সেই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এই দুটি পরিবারের সদস্যরা।
সূত্র: বিবিসি