শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী জমি দখল: ‘আবুল খায়ের গ্রুপ’কে ২ লাখ টাকা জরিমানা
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কালীগঞ্জের বালিগাঁও এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী (ফোরশোর) জমি দখলের অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ‘আবুল খায়ের গ্রুপ লিমিটেড’র আবুল খায়ের ইন্ডাস্ট্রিজকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার (২১ আগস্ট) এ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী (ফোরশোর) জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে আবুল খায়ের ইন্ডাস্ট্রিজ। এ অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও নির্মিত স্থাপনা অপসারণ করে আগামী দুই মাসের মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট থেকে ‘কোনো খাস জমি দখলে নেই’ এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় ভূমি অফিস এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, কালীগঞ্জ পৌরসভার বালিগাঁও মৌজায় অনুমানিক প্রায ৮০ একর ‘ফসলি’ জমিতে গড়ে উঠেছে ‘আবুল খায়ের গ্রুপ লিমিটেড’র কয়েকটি ফ্যাক্টরি। এর মধ্যে রয়েছে ১ নং খতিয়ানভুক্ত আর এস ২০৮৭ নং দাগে ৪৫ শতাংশ একটি হালটসহ প্রায় ৩ একর সিকস্তি জমি যা ‘সম্পূর্ণ সরকারী সম্পত্তি’ কিন্তু তাদের দখলে। এছাড়াও প্রায় আরো ১ একর নদী দখল করেও বরাট করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া কোম্পানির নামে মাত্র ০৬ একর ০১৪৪ শতাংশ জমি নামজারি করে অফিসিয়াল সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে আবুল খায়ের গ্রুপ।
সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করার উদ্দেশেই তাদের সকল জমি নামজারি করছে না কোম্পানিটি। সকল জমি কোম্পানিটির নিজস্ব না হওয়ায় এবং ফসলি, সরকারি ও নদীর জমি থাকায় নামজারি করাও আইন অনুযায়ী বৈধ নয় বলে জানান ভূমি সংশ্লিষ্টরা।
এর বাহিরে কালীগঞ্জ পৌরসভার দড়িসোম মৌজায় ১ নং খতিয়ান ভুক্ত আরএস ৪৭ দাগের ১ একর ৩৭ শতাংশ জমিতে পার্ক নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সেই জমিও দখলে রয়েছে ‘আবুল খায়ের গ্রুপ লিমিটেড’র।
উল্লেখ্য : ২০১৮ সালের ৩ মার্চে দিনে দুপুরে অবৈধ গজারী গাছের পাইলিং দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী দখলের অভিযোগ উঠেছিল আবুল খায়ের গ্রুপের বিরুদ্ধে। এরপর ওইদিনই সরকারী সম্পদ দখল ও অপব্যবহারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে তাদের কাজ বন্ধ করেছিলেন তৎকালীন কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ হোসেন।
এছাড়াও ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে শীতলক্ষ্যা নদীর কালীগঞ্জ অংশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নদীর জমিতে স্থাপিত আবুল খায়ের গ্রুপের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছিল বিআইডব্লিউটিএ।
আরো জানতে…….
দিনে দুপুরে নদী দখলের অভিযোগ ‘আবুল খায়ের গ্রুপ’র বিরুদ্ধে
কালীগঞ্জে চার কোম্পানির দখলে ‘শীতলক্ষ্যার ১৫ একর জমি’, উদ্ধারের দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ!
সেভেন রিংস সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ফসলি জমিতে, নদীর পাড় দখল করে সম্প্রসারণ
কালীগঞ্জে শীতলক্ষ্যার ৩ একর জমি ভরসা গ্রুপের দখলে