স্বাস্থ্য

নীরব ঘাতক উচ্চরক্তচাপ

গাজীপুর কণ্ঠ, স্বাস্থ্য ডেস্ক : রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, তাহলে তাকে উচ্চরক্তচাপ বলে। কেউ উচ্চরক্তচাপে ভুগছে তা বলার আগে অন্তত তিন দিন তিনটি ভিন্ন সময়ে পাঁচ মিনিট বসে থাকলে হবে। তাপর রক্তচাপ মাপালে তিনবারই যদি বেশি পাওয়া যায়, তবে তিনি উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন বলে নিশ্চিত বলা যায়। উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশনকে হাইব্লাড প্রেশারও বলা হয়ে থাকে।

লক্ষণ : অনেকে আছেন, যারা উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন, কিন্তু তারা নিজেরা সেটা জানেন না। দীর্ঘদিনের উচ্চরক্তচাপ থেকে কোনো একটা জটিল কিছু হওয়ার পরই ধরা পড়ে। এ কারণে এই রোগকে নীরব ঘাতকও বলা হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে প্রথমদিকেই এ রোগের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন : মাথা ব্যথা বা মাথা ভারী ভারী লাগা, মাথা ব্যথার পাশাপাশি চোখ ব্যথা বা ঝাপসা দেখা, ঘাড় ব্যথা করা, বমি বমি ভাব এমনকি বমি হওয়া, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা নাক দিয়ে রক্তও পড়তে পারে। প্রতিরোধ

৩৫-৪০ বছর বয়স থেকে প্রত্যেকেরই নিয়মিত রক্তচাপ মাপা উচিত। এ ছাড়া বাবা-মা কারও যদি উচ্চরক্তচাপ থাকে, সন্তানদেরও সতর্ক থাকতে হবে। যাদের রক্তচাপ বেশি ধরা পড়ে, তাদের সতর্ক হতে হবে। যেমন: লবণ খাওয়া কমাতে হবে।ওজন বেশি হলে কমাতে হবে। নিয়মিত হাঁটাচলা করতে হবে। ধূমপানের অভ্যাস বাদ দিতে হবে। যাদের উচ্চরক্তচাপ নেই, এই চারটি নিয়ম মেনে চললেউচ্চরক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

কারণ

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ (প্রতিদিন ৬ গ্রামের বেশি), অতিরিক্ত মেদ-ভুঁড়ি, কাজের চাপ বেশি, দুশ্চিন্তায় ভোগা, মদ্যপান (অ্যালকোহল) বা ধূমপান, অতিরিক্ত আওয়াজ ও ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা, ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকা ইত্যাদি। উচ্চরক্তচাপ কিডনির সমস্যার কারণেও হয়। বংশগতভাবেও অনেকে হাইব্লাড প্রেশারের শিকার হয়ে থাকে। উচ্চরক্তচাপ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ওপরও স্বল্প থেকে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। বিশেষত স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিউর, হৃৎক্রিয়া বন্ধ, চোখের ক্ষতি ও কিডনি ফেইলিউর ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কখনো কখনো গর্ভবতী মহিলারাও গর্ভধারণের কারণে উচ্চরক্তচাপের শিকার হয়ে থাকেন।

খাদ্যতালিকা

ভিটামিন সি-জাতীয় খাদ্য, রসুন, কাঁচাবাদাম, ডাবের পানি, কলা, শাকসবজি, ওটমিল, তরমুজ, শসা, মধু, ডার্ক চকলেট, কমলা, কালিজিরা, পেয়ারা, লেবু ও পেঁয়াজের রস, আঙুর, স্ট্রবেরি ইত্যাদি যা রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবে কমিয়ে থাকে।

অন্যদিকে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যেমন লবণ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, টিনজাত খাবার, স্যুপের ঝোল, লম্বা সময় ধরে সংরক্ষিত আচার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, মুরগির চামড়া, অ্যালকোহল, লাল মাংস, মাখন, কফি বা ক্যাফেইন ইত্যাদি।

যারা ওষুধ খাচ্ছেন, ওষুধ নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া উচিত, যদিও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কারণ ওষুধ বন্ধ করলে আবার রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাঝেমধ্যে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত ওষুধ ঠিকমতো কাজ করছে কি না, অন্য কোনো জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না।

ডা. আমিনা আফরোজ অনু

এমবিবিএস (ডিইউ)

ডেলটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

লেকচারার, ট্রমা আইএমটি অ্যান্ড ম্যাটস

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button