টঙ্গী পূর্ব থানায় হয়েছিল সাধারণ ডায়েরি, তবু ‘কনস্টেবলের লাশ দাফন বেওয়ারিশ হিসেবে’?
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ন্যাশনাল পার্ক এলাকা থেকে ৪ মার্চ উদ্ধার হওয়া গলাকাটা লাশটির পরিচয় মিলেছে অবশেষে। লাশটি ছিল গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের এক পুলিশ সদস্যের। অথচ টানা চার দিন ডোমঘরে লাশটি পড়ে থাকার পরও পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফনের চার দিন পর মেলে সেই পরিচয়।
নিহত ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. শরিফুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকায়। তিনি মহানগর ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন টঙ্গী পূর্ব থানায়।
‘মুঠোফোনের সংযোগ না পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় যায় পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু থানা পুলিশও তাঁর খোঁজ দিতে পারছিল না। পরে ৯ মার্চ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁরা। এর দুই দিন পর ১১ মার্চ জানতে পারেন, শরিফুলকে হত্যা করা হয়েছে, তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে বেওয়ারিশ হিসেবে’।
গত ৪ মার্চ তাঁর লাশ পড়ে ছিল গাজীপুর ন্যাশনাল পার্কের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কিনারা এলাকায়। পরে ১১ মার্চ শরিফুলের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর আগে ৮ মার্চ তাঁর লাশ দাফন করা হয় বেওয়ারিশ হিসেবে।
শরিফুলের পরিবার জানায়, অসুস্থতার ছুটি নিয়ে ২১ দিনের জন্য বাড়ি গিয়েছিলেন শরিফুল। ছুটি শেষে ২ মার্চ যোগ দেন কর্মস্থল গাজীপুর মহানগর পুলিশে। এরপর তাঁকে বদলি করা হয় ট্রাফিক পুলিশের দক্ষিণ বিভাগ টঙ্গী পূর্ব থানায়। ৩ মার্চ তিনি যোগ দেন সেখানে। ওই রাত ১১টার দিকেও মুঠোফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। কিন্তু এর পর থেকেই মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। এরপর কোনোভাবেই সংযোগ না পেয়ে পরের দিন টঙ্গী পূর্ব থানায় আসেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু পুলিশও তাঁর খোঁজ দিতে পারছিল না। পরে ৯ মার্চ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁরা। এর দুই দিন পর ১১ মার্চ জানতে পারেন, শরিফুলকে হত্যা করা হয়েছে, তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে বেওয়ারিশ হিসেবে।
শরিফুলের বাবা আলাউদ্দিনের ভাষ্য, মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ার পর থেকেই তাঁরা প্রতিদিন থানায় এসেছেন। কিন্তু পুলিশ কোনো সন্ধান দিতে পারেনি বা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এরপর গত মঙ্গলবার পিবিআই থেকে জানানো হয় তাঁর ছেলের মৃত্যুর কথা। আলাউদ্দিন বলেন, নিজ কর্মস্থলের জেলায় এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল, অথচ পুলিশ কিছুই করতে পারল না। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার চান।
গাজীপুর পিআইবিয়ের পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে ওই দিনই হেড অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সার্ভার নষ্ট থাকায় (৯ মার্চ পর্যন্ত) তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। পরে গত মঙ্গলবার পরিচয় হাতে পাওয়ার পরপরই আমরা সবাইকে জানিয়েছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আজাদ মিয়া বলেন, ‘পরিচয় শনাক্তের পর থেকে বিভিন্ন সংস্থা রহস্য উদ্ঘাটনের কাজ করছে। আশা করছি শিগগিরই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’
তথ্য সূত্র: প্রথম আলো