আইন-আদালত

ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেওয়া অবৈধ: হাইকোর্ট

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেওয়া অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিভিন্ন বয়সী ১২১টি শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া সাজা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন আদালত।

বুধবার (১১ নভেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আবদুল হালিম ও ইশরাত হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

আদালত রায়ে বলেন, ‘এখতিয়ার না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কখনোই শিশুদের সাজা দিতে পারবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে একইসময়ে ওই ১২১টি শিশুকে যে প্রক্রিয়ায় সাজা দেওয়া হয়েছে, তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অমানবিক। একইসঙ্গে এই ধরনের সাজা প্রদান আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামকে ব্যাহত করেছে। এদের সবার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও আইনি জ্ঞান কম, এগুলো বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার।’

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ডিত হয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশু আদালত ব্যতীত অন্যান্য আদালতের অধীনে সাজাপ্রাপ্ত ১২ বছর বয়সী থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। ‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদুর হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।

হাইকোর্ট তার আদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক শিশুদের দণ্ড প্রদানকে অসাংবিধানিক, অবৈধ এবং বাতিল বলে ঘোষণা করেন। এছাড়াও শিশুদের মধ্যে যাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালত দণ্ড দিয়েছে, তাদেরকে দ্রুত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র বা হাজত থেকে ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেন।

এছাড়া সাত কার্য দিবসের মধ্যে ওই ১২১টি শিশুকে দণ্ড প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট র‌্যাব কর্মকর্তাদের যারা অবৈধভাবে দণ্ড দিয়েছেন, তাদেরকে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই দণ্ডপ্রাপ্ত শিশুদের মামলার যাবতীয় নথি আলাদা করে দাখিল করতে বলেন আদালত।

ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক পরিচালিত শিশুদের দণ্ড প্রদানের বিষয়ে শিশু আইন এবং দণ্ডবিধির বিধি বহির্ভূত হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ড কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও আদালত রুল জারি করেন। সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। ওই প্রতিবেদনে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১২১টি শিশুকে সাজা দিয়ে তাদের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর তথ্য উল্লেখ করা হয়।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button