আইন-আদালতআলোচিত

অপহরণকারীদের সাহায্য, সাভার থানার ওসিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক :মানবাধিকার খবর’ নামক মাসিক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মানবাধিকার কর্মী মো. রিয়াজ উদ্দিনের অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করেও মামলা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এফএম শাহেদ হোসেনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিয়াজ উদ্দিন নিজেই বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার শুনানি শেষে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাভার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকারিয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলি এবং সাভার থানাধীন ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক, অপহরণকারী বৃষ্টি, তার স্বামী শুধাংশ রায়, নয়ন কুমার ও রণিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ৬ জন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর সঙ্গে গত বছর ডিসেম্বর আসামি বৃষ্টির ফেসবুকে পরিচয়। সেখানে সে বাদীকে একটি ছেলেসহ বিভিন্ন অসহায়ত্বের কথা বলেন। বাদী মানবাধিকর কর্মী হওয়ায় তার কাছে সহায়তা চান এবং সরেজমিনে অসহায়ত্বে দেখে প্রতিবেদন প্রকাশের অনুরোধ করেন। বাদী সরল বিশ্বাসে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাভার বাসস্টান্ড হয়ে হেমায়েতপুরে অবস্থিত বালুর মাঠের সোহরাব হোসেনের বৃষ্টির ভাড়া বাড়ির সামনে দুপুর ১টার দিকে যান। সেখানে তিন থেকে চারজন ছেলে তাকে বৃষ্টির ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায় এবং বাড়িতে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করে বেঁধে মারধর শুরু করে এবং তার কাছে থাকা নগদ ১১ হাজার ৫০০ টাকা, মোবাইল, ক্যামেরা, এটিএম কার্ড নিয়ে যায়। এরপর নির্যাতন করে এটিএম কার্ড ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে আরও ৬ হাজার টাকা তুলে নেয়। এরপর বাদীর মোবাইল নম্বর থেকে তার স্ত্রীসহ বিভিন্ন জনকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো মুক্তিপণ না পেয়ে বাদী ও তার স্ত্রী অনুনয় বিনয়ের পর বেলা ৪টার দিকে বাদীকে সাভার নিয়ে ছেড়ে দেয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এরপর বাদী সাভার থানায় যান এবং পুলিশ আসামিদের কাছে অপহরণের বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরপর আসামি এনামুল হক ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আসামি বুষ্টি, নয়ন কুমার, রণি ও অজ্ঞাত এক নারীকে গ্রেপ্তার করেন এবং বাদীর সব কিছু উদ্ধার করে তাদেরসহ থানায় নিয়ে আসেন। থানার আসার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতির এক পর্যায়ে পুলিশ আসামিরা বাদীকে আটককৃতদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন। না করলে উল্টো ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মামলায় বাদীকে আদালতে চালান দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান এবং বাদীর মোবাইল নিয়ে থানার লকাপে ভরার আদেশ দেন। পরে জোর করে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বাদীকে থানা ছাড়তে বাধ্য করেন। পরে বাদী জানতে পারেন যে, আটককৃরা সংঘবন্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ পাওয়ার চুক্তি করে বাদীকে উল্টো মামলার ভয় দেখায়।

বাদী পক্ষে অ্যাডভোকেট আজাদ রহমান, মোহাম্মাদ জাহিদু রহমান মিয়া, প্রিয়লাল সাহা, সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসি মামলা পরিচালনা করেন।

আইনজীবী জাহিদুর রহমান জানান, এই ঘটনায় এর আগে বাদী ঢাকার পুলিশ সুপারের কাছেও একটি অভিযোগ দিয়েছেন। যা বর্তমানে তদন্ত চলছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button