গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশন এখনো রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
টিআইবির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দুদকের তদন্ত এবং দায়ের করা মামলাগুলো কিভাবে অগ্রসর হবে সেজন্য শীর্ষ কর্মকর্তা এবং সরকারের মনোভাবের দিকে তাকিয়ে থাকেন কর্মকর্তারা।
তবে টিআইবির এ ধরণের মূল্যায়নকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে মূল্যায়নের জন্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের গবেষণায় বেশ কিছু বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছে।
অভিযোগ দায়ের করা, দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা এবং মামলায় সাজার হার – এসব ক্ষেত্রে দুদক ভালো নম্বর পেয়েছে। কিন্তু মূল জায়গায় এখনো গলদ রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে টিআইবির গবেষণায়।
সেটি হচ্ছে, দুদককে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা।
টিআইবির এই গবেষণার সাথে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের অন্যতম শাম্মি লায়লা ইসলাম।
তিনি বলেন, ” বিরোধী দলের রাজনীতিকদের হয়রানি করা এবং ক্ষমতাসীনদের প্রতি নমনীয় হবার অভিযোগ তথ্য দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।”
টিআইবির গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, একই ধরণের মামলা সমানভাবে পরিচালনা না করার অভিযোগ রয়েছে দুদকের বিরুদ্ধে।
টিআইবির গবেষণার মাপকাঠিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সার্বিকভাবে ৬০ নম্বর পেয়েছে, যেটিকে ‘মধ্যম পর্যায়ের’ বলে বর্ণনা করছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।
৬৭ থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পেলে সেটি টিআইবির মাপকাঠিতে উচ্চ স্কোর।
দুদক রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে, এমন অভিযোগ খারিজ করে দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবী খুরশিদ আলম।
তিনি বলেন, ” আমাদের দায়ের করা মামলাগুলোর সাজার হার যদি ৭০ পার্সেন্টের উপরে হয়, তাহলে তিনি কিভাবে বলছেন যে আমরা মধ্যম মানের? আমরা গত একমাসে ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের মামলা করেছি। তাদের কোন পলিটিক্যাল পরিচিতি আমরা পাইনি।”
খুরশিদ আলম প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতির মামলায় যাদের সাজা হয়েছে তাদের কত শতাংশ বিএনপি?
দেশে এমন অভিযোগ বেশ জোরালো যে কেউ যদি ক্ষমতাসীন দলের সুনজর থেকে সরে যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দুদক সক্রিয় হয়। এর আগে কোন পদক্ষেপ দেখা যায়না। টিআইবির গবেষণায়ও এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছেনা বলে সংস্থাটি বলছে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম সুনির্দিষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত দুদকের পক্ষে কাজ করা কঠিন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের তরফ থেকে বরাবরই দাবি করা হয় যে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে। কিন্তু টিআইবির মতো যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার তাদের অনেকেই বলছেন, শুধু স্বাধীনতার দাবি করলেই হবে না, দুদক সম্পর্কে মানুষ কী ভাবছে সেটিও বড় বিষয়।