ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯% বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ব্যাংকঋণের সুদ এক অংকের ঘরে নামাতে শেষ পর্যন্ত সুদহার বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হবে ৯ শতাংশ। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এ সুদহার কার্যকর হবে। সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৯ শতাংশ। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে ৯ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদ আরোপ করতে পারবে। এ দুই প্রকারের সুদ ব্যতীত অন্য কোনো সুদ বা দণ্ড ব্যাংক গ্রাহকদের ওপর আরোপ করতে পারবে না। তবে প্রি-শিপমেন্ট রফতানি ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৭ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।
‘ঋণ/বিনিয়োগের সুদ/মুনাফা হার যৌক্তিকীকরণ’ শীর্ষক ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমানে ব্যাংকের ঋণের উচ্চ সুদহার দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পসহ ব্যবসা ও সেবা খাতের বিকাশে প্রধান অন্তরায় হিসাবে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকঋণের সুদহার উচ্চমাত্রার হলে সংশ্লিষ্ট শিল্প, ব্যবসা ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন খরচ বাড়ে। এতে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। শিল্প, ব্যবসা ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো কখনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় বিধায় সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতারা যথাসময়ে ব্যাংকঋণ পরিশোধে সমর্থ হয় না। এতে ব্যাংকিং খাতে ঋণশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। এ প্রেক্ষাপটে শিল্প, ব্যবসা ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে অধিক সক্ষমতা অর্জনসহ শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা এবং কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সুদহার যৌক্তিকীকরণের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
৯ শতাংশ সুদের বাধ্যবাধকতা থেকে এসএমই ও রিটেইল খাতকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন ব্যাংক নির্বাহীরা। ফলে এ দুটি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যাওয়ার শঙ্কা জানিয়েছিলেন তারা। যদিও ব্যাংক নির্বাহীদের সে দাবিকে বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বরং এসএমই খাতে যাতে ঋণপ্রবাহ না কমে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এতে বলা হয়, চলতি বছর থেকে ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির মধ্যে এসএমইর ম্যানুফ্যাকচারিং খাতসহ শিল্প খাতে প্রদত্ত সব ঋণের স্থিতি অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন বছরের গড় হারের চেয়ে কোনোভাবেই কম হতে পারবে না।