গোয়েন্দা সংস্থা ১৫৩ অপকর্মকারীর তালিকা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : পাপিয়ার ঘটনাই শেষ নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগি এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনে এরকম আরো ১৫৩জন রয়েছেন যারা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে নানা রকম অপকর্ম করছেন। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে তৃণমূলে পর্যায় পর্যন্ত এ ধরণের অপকর্মকারী রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এরকম ১৫৩ জনের একটি তালিকা দিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের প্রতি কোন রকমের অনুকম্পা না দেখানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের জন্য কেউ যদি তদবির করে তাহলে তার পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী দলের ভিতর যারা অপকর্ম করছেন তাদের ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যারা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সেই প্রধান মন্ত্রীর সেই নির্দেশনার অংশ হিসেবেই বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে অজ্ঞাত কারণে এই শুদ্ধি অভিযান থেমে যায়।
এরপর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, যারা আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে নানারকম অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, যারা আদর্শ এবং নীতি বহির্ভুত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে দলে জায়গা দেয়া হবেনা। কিন্তু তারপরেও একইভাবে পাপিয়ার মতো মেয়েরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বের বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। এটা নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ্ব এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যাচাই-বাছাই ছাড়া কেন এদেরকে স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে আনা হয়, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, সারাদেশে আওয়ামী লীগের যে অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যে কমিটি রয়েছে সে কমিটিগুলোতে কারা আছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ রয়েছে তা যেন খতিয়ে দেখা হয়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, ‘আমি জানি কারা কারা এসব অপকর্ম করছে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেন এখনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা?’ বিশেষ করে একজন অপরাধ করার পর কিংবা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হবার পর বা তাঁর অপরাধ সামনে আসার পর কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, আগে কেন নেয়া হচ্ছেনা? এবং এই কারণেই আওয়ামী লীগের মধ্যে আবার নতুন করে শুদ্ধি অভিযান শুরু হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হবার আগেই যেন দল থেকে বহিষ্কার কিংবা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।