এক নারীকে “নির্যাতন” করে হত্যার অভিযোগ ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে : তদন্ত কমিটি গঠন
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : জিএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে ইয়াসমিন বেগম (৪০) নামে এক নারীকে আটকের পর “নির্যাতন” করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, ওই নারী হৃদরোগ আক্রান্ত ছিলেন। এ ঘটনা তদন্তে জিএমপি পুলিশ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
নিহত ইয়াসমিন বেগম মহানগরের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকার আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী।
নিহতের ছেলে জিসান অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, তার বাবা মাদকসেবী হলেও বিক্রেতা নন। আর তাদের পরিবারের কারও বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। বরিশালের গ্রামের বাড়িতে মরদেহের দাফন শেষে এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগ করে জিসান আরও বলেন, গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তার বাবার (আব্দুল হাই) খোঁজে বাসায় যায়। তাকে না পেয়ে মাকে (ইয়াসমিন) মারতে মারতে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাত ১১টার দিকে পুলিশ বাড়িতে ফোন করে জানায়, ইয়াসমিন অসুস্থ। তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। অসুস্থতার খবর শুনে রাত ১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে ইয়াসমিনকে জীবিত পাননি।
মায়ের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে দাবি জিসানের।
গাজীপুর মহানগর ডিবি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মঞ্জুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার রাতে ১২০টি ইয়াবাসহ ইয়াসমিন বেগমকে গ্রেফতার করে মহানগর ডিবি পুলিশ। হাজতে আনার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের পুরো পরিবার মাদক সেবন ও ব্যবসায়ে জড়িত বলে দাবি এই পুলিশ কর্মকর্তার। এর আগেও র্যাব ও থানা পুলিশ তাদেরকে মাদকসহ গ্রেফতার করেছিল বলে জানান তিনি।
ঘটনা তদন্তে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আজাদ মিয়ার নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আব্দুল হামিদ ও সহকারী কমিশনার (এসি) আহসান হাবিব।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মহানগর ডিবি পুলিশ ইয়াসমিন বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন তার বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। দ্রুত তাকে ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য বলা হয়। কিন্তু রাত সোয়া ১১টার দিকে শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।