জাতীয় পার্টিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি নুরুল ইসলাম দীপুকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব করায় জাতীয় পার্টিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে পূবাইল থানা ছাত্রলীগ।
বুধবার বিকেলে ছাত্রলীগের উদ্যোগে পূবাইলের মিরের বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ ও মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
পূবাইলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে দিপুকে গ্রেপ্তার ও জাপার পদ থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কুশপুত্তলিকা দাহ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে পূবাইল থানা ছাত্রলীগ।
পূবাইল থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন মিরাজ এর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন পূবাইল থানা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলজার হোসেন মৃধা টুটুল।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন পূবাইল থানা ৩৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি ফারুক মোল্লা, সাধারন সম্পাদক আল্ আমিন, ৪১ নং ওয়ার্ড সাধারন সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, পূবাইল থানার যুবলীগ নেতা শেখ হালিম, মীর মোশারফ, মোক্তাদির হোসেন নয়ন, আমিনুল চেয়াম্যান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের জনপ্রিয় নেতা সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার ২০০৪ সালে ৭ মে টঙ্গীর নোয়াগাঁও মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। এসময় গুলিতে ওমর ফারুক রতন নামের আরও একজন কিশোর নিহত হন। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই মো. মতিউর রহমান বাদী হয়ে ১৭জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২জনের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ এবং আসামিপক্ষে দুজন সাক্ষ্য দেন। এ মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে প্রধান আসামী বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদন্ড, ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং দুইজনকে খালাস দেয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েক আসামী তাদের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করেন। শুনানী শেষে সর্বশেষ ২০১৬ সালের জুন মাসে উচ্চ আদালতের রায়ে ছয়জনের মৃত্যুদন্ড, ৮জনের যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দেন। রায়ে দ্রুত বিচার আদালতে মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছিল এমন ১১জন আসামিকে খালাস দেয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকার, মাহবুবুর রহমান ও সোহাগ এবং যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী ও নুরুল আমিনসহ ৮জন বিভিন্ন কারাগারে বন্দী রয়েছে। নুরুল ইসলাম দীপুসহ বাকি দন্ডপ্রাপ্তরা ভারত, ইতালি, বেলজিয়া, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।
আহসান উল্লাহ মাষ্টার ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর-টঙ্গী) আসন হতে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফায় পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলোপের পর চেয়ারম্যান সমিতির আহবায়ক হিসেবে উপজেলা পরিষদের পক্ষে মামলা করেন ও দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এক পর্যাযে তিনি গ্রেফতার হন ও কারাভোগ করেন। আহসান উল্লাহ মাষ্টার শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সস্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।