গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বর্তমানে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
রোববার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানান।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
সরকারি শূন্য পদে নিয়োগ চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ ফরহাদ হোসেন বলেন, ৩৭ ও ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে গত বছর ৫ হাজার ৮৫৯ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে ১ হাজার ৯১৯ জন ক্যাডার পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। ১০-১২তম গ্রেডের জনবল কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৩-২০তম পদে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা দপ্তর থেকে নিয়োগ হয়ে থাকে। গত বছর (১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৮৮ হাজার ১২৩টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ সময় ৮৪৬টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির সাংসদ জি এম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারের বিভিন্ন পদে বর্তমানে ১৭৭ জন চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্তরের ২৯০ জন ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হিসেবে কর্মরত।
সরকারি দলের সাংসদ মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২।
বিএনপির সাংসদ মোশাররফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন জানান, ঢাকা জেলায় বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা সবচেয়ে বেশি। এ জেলার ৩৫৫ জন বিসিএস কর্মকর্তা আছেন। সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। এ জেলায় আছেন ২৫০ জন কর্মকর্তা। এ ছাড়া কুমিল্লার ২৯২ এবং ময়মনসিংহে আছেন ২১৪ জন। সবচেয়ে কম ক্যাডার কর্মকর্তা রয়েছেন পার্বত্য বান্দরবান জেলায়। এ জেলায় আছেন মাত্র ৮ জন। এ ছাড়া অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে ২৯ জন এবং রাঙামাটিতে ৩৭ জন ক্যাডার কর্মকর্তা রয়েছেন। এদিকে সচিব পদমর্যাদার সর্বোচ্চ ৫ জন কর্মকর্তা আছেন বরিশাল জেলায়।
বর্তমানে ক্যাডার পদে ৬ হাজার ৫৫ জন কর্মকর্তা কর্মরত। এর মধ্যে সিনিয়র সচিব পদে ১০ জন, সচিব পদে ৬৭, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫৭, যুগ্ম সচিব পদে ৬৫৮, উপসচিব পদে ১ হাজার ৬৯৩, সিনিয়র সহকারী সচিব পদে ১ হাজার ৫২২ ও সহকারী সচিব পদে ১ হাজার ৫৫৮ জন।
বিচারাধীন মামলা ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ৬৩৯
সংরক্ষিত আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, বর্তমানে (সেপ্টেম্বর ২০১৯) বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ৬৩৯। এর মধ্যে দেওয়ানি ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ১০৭টি এবং ফৌজদারি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫২৬টি। এ ছাড়া অন্যান্য মামলার সংখ্যা (কনটেম্পট পিটিশন/রিট/আদিমসহ) ৯৭ হাজার ৪।
আইনমন্ত্রী জানান, বিচারাধীন মামলার মধ্যে উচ্চ আদালতের ৫ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৬টি এবং নিম্ন আদালতের ৩১ লাখ ২৭ হাজার ২৪৩টি। বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পদ সৃষ্টি, শূন্য পদে নিয়োগে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
স্বাক্ষরের অপেক্ষায় তিস্তা চুক্তি
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, গঙ্গা চুক্তির আলোকে ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তিস্তা নদীর অন্তর্বর্তীকালীন পানিবণ্টন চুক্তির খসড়া ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এটি যথাযথ পর্যায়ে স্বাক্ষরের অপেক্ষমাণ। এ ছাড়া মনু, মুহুরি, খোয়াই, ধরলা, দুধকুমার ও গোমতী নদীর পানিবণ্টন চুক্তির খসড়া ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের জন্য হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের প্রক্রিয়া চলমান। পরবর্তী পর্যায়ে মহানন্দাসহ অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।