কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে শ্লীলতাহানি: কালীগঞ্জ পৌর যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী ধর্ষনের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জ পৌর যুবলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।
কালীগঞ্জ থেকে অপহরণ করা ওই ছাত্রীকে পূবাইলের বাড়ইবাড়ি এলাকা থেকে বুধবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জিএমপি’র পূবাইল থানায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শুক্কুর আলীর (৩২) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ওই ছাত্রী।
শুক্কুর আলী কালীগঞ্জ পৌরসভার বালিগাঁও এলাকার আবদুল আলীর পুত্র। তিনি কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্কুরের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে ও বহু নারী কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
অপহৃত ওই ছাত্রীর বরাত দিয়ে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ভিগটিম ওই ছাত্রী টঙ্গী সরকারি কলেজে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তার বাড়ি কালীগঞ্জের ভাতগাতী গ্রামে। ওই ছাত্রীর বাবা ও মা মারা গেছেন। একমাত্র ছোট ভাই দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। দাম্পত্য কলহে ভাইয়ের স্ত্রী সম্প্রতি কালীগঞ্জ থানায় নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে কলেজছাত্রী ও তার ভাইকে। এ ঘটনায় হয়রানি এড়াতে ছাত্রীকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির সাথে দেখা করার পরামর্শ দেন মুরুব্বিরা। সংসদ সদস্যের ঢাকার বাসা না চেনায় ছাত্রী সহযোগিতা চান যুবলীগ নেতা শুক্কুর আলীর কাছে।
যুবলীগ নেতা শুক্কুর আলী ওই ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বুধবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জে ডেকে এনে তাকে অপহরণ করার উদ্দেশ্য মোটরসাইকেলে করে রাত ৮টার দিকে ছাত্রীকে পূবাইলের বাড়ৈইবাড়ি এলাকার শাহীন স্যুটিং স্পটে নিয়ে যান শুক্কুর। ছাত্রীর সন্দেহ হলে চিৎকার শুরু করেন। তখন যুবলীগ নেতা শুক্কর তাকে টেনে একটি ঘরে ঢোকাতে চেষ্টা চালান। আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে শুক্কুর আলী পালিয়ে যান। পরে এলাকার লোকজন ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
অপহৃত ওই ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, মামলা না করার জন্য কালীগঞ্জের অনেকে নেতাই পূবাইল থানায় এসে আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। আমার বাবা-মা নেই। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
যুবলীগ নেতা শুক্কুর আলী সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মেয়েটির কোন থাকার জায়গা নেই বলে আমাকে জানালে আমি রাতে মোটর সাইকেলে পূবাইলের শাহীন সুটিংস্পটে একটি রুম ভাড়া করে সেখানে রেখে আসতে গিয়েছিলাম।
মেয়েটি গেইটের সামনে থেকে দৌড়ে পালালে আমিও চলে আসি। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা।
পূবাইল থানার ওসি নাজমুল হক ভূঁইয়া জানান, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অপহরণ, শ্লীলতাহানির অভিযোগে শুক্কুর আলী ও তার সহযোগী আলীকে আসামি করে অপহৃত ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূবাইল থানায় একটি মামলা করেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’