আলোচিত

সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে যারা আসছেন

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের পর এখন আলোচনা চলছে সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিয়ে। কারা আসছেন এই পদগুলোতে তা নিয়ে সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগের ভেতর ও বাইরে নানা রকম আলাপ চলছে। জানা গেছে, জাতীয় সংসদের স্পিকার পদে কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা না থাকলেও ডেপুটি স্পিকার পদে পরিবর্তন আসছে। সংসদ উপনেতা ও চিফ হুইপ পদেও নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে তরুণ নেতৃত্বের সমন্বয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মন্ত্রিসভা গঠনে চমক দেখালেও সংসদীয় কমিটির সভাপতি পদে সেই অর্থে চমক থাকছে না। বিদায়ী সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকা অভিজ্ঞ মন্ত্রীদের বড় অংশকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রধান করার সম্ভাবনা বেশি।

দশম সংসদে সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা কেউ কেউও আবারও দায়িত্ব পেতে পারেন। এর বাইরে শরিক দলের সংসদ সদস্যদেরও দুই-একটি সংসদীয় কমিটির নেতৃত্ব দেওয়া হতে পারে। বিরোধী দলের এক বা একাধিক সিনিয়র সংসদ সদস্যকেও সংসদীয় কমিটির সভাপতি করার সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী স্পিকার পদে আবারও নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন এটা অনেকটাই নিশ্চিত। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. শিরীন শারমিনকে আবারও স্পিকার হিসেবে দেখতে চান বলে আওয়ামী লীগের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে স্পিকারকে প্রধানমন্ত্রী আভাসও দিয়েছেন বলে ওই সূত্র জানিয়েছেন।

তবে ডেপুটি স্পিকার পদে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র। এক্ষেত্রে বর্তমান ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার স্থলে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুর নাম শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ আরও দুই-একজন আলোচনায় রয়েছেন।

সংসদ উপনেতা নির্বাচনে দশম সংসদের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দ নারী সংসদ সদস্য। এক্ষেত্রে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর স্থলে পরপর দুই সরকারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকারী মতিয়া চৌধুরীর সম্ভাবনাই বেশি। এর বাইরে আওয়ামী লীগের দুই সিনিয়র নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমদের নামও আলোচনায় রয়েছে।

দশম সংসদে হুইপের দায়িত্বে থাকা ও মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন চিফ হুইপ হচ্ছেন এমন আলোচনা সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে। পঞ্চম সংসদ থেকে শুরু করে টানা ৬ বারের নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য চিফ হুইপ হিসেবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পছন্দ বলেও দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। অবশ্য দশম সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজও রয়েছেন আলোচনায়। এদিকে সরকারি দলের হুইপ হিসেবে নওগাঁ-১ আসনের শহীদুজ্জামান সরকার, জয়পুরহাট-২ আসনের আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম-৬ আসনের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও গাজীপুর-৪ আসনের সিমিন হোসেন রিমির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ একজন নেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন। অবশ্য রাজনৈতিক অপর একটি সূত্র জানায়, দশম সংসদে হুইপের দায়িত্বে থাকা শেরপুর-১ আসনের আতিউর রহমান আতিক আবারও নিয়োগ পেতে পারেন।

এদিকে সরকারের ওয়াচডগ হিসেবে পরিচিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দায়িত্বে কারা আসছে তা নিয়েও চলছে আলোচনা। জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী দশম সংসদে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালনকারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে সংসদীয় কমিটিতে। সরকারের কাজের গতি বাড়াতে এসব মন্ত্রীরা যেসব মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাদের সেসব মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি করার সম্ভাবনা বেশি। মন্ত্রিসভার বাইরে থাকা শরিক দলের সদস্যরাও এক বা একাধিক সভাপতি পদ পেতে পারেন। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকেও একাধিক সদস্য সভাপতি থাকতে পারেন। জানা গেছে, সংসদের প্রথম অধিবেশনেই বেশিরভাগ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দশম সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘সংসদের কয়েকটি কমিটির সভাপতি নির্ধারিত থাকেন। পদাধিকার বলে স্পিকার সভাপতি থাকেন সেগুলোতে। আর মন্ত্রণালয় সম্পর্কিতসহ অন্যান্য সংসদীয় কমিটির সভাপতি সংসদ নেতা ঠিক করেন। এক্ষেত্রে কে বা কারা হবেন তা সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বলতে পারবেন।’

চিফ হুইপ হিসেবে আলোচনায় থাকা নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন বলেন, ‘চিফ হুইপ কে হচ্ছেন এই তথ্য আমার কাছে নেই। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাই এ পদে নিয়েোগ দেবেন এবং তিনিই জানেন এ পদে কে আসছেন।’

সংসদের প্রথম বৈঠকের আগেই চিফ হুইপ ও অন্যান্য হুইপ নিয়োগ হবে এমনটি জানিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংসদ নেতার প্রস্তাব অনুসারে প্রধান হুইপ ও হুইপ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর সরকার ও বিরোধী দলের দুই প্রধান হুইপের সঙ্গে আলোচনা করে সংসদের অধিবেশন কক্ষের আসন বণ্টনসহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।’

সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে পূর্ণ মন্ত্রী পদমর্যাদার প্রধান হুইপ ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার হুইপ পদে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। এক্ষেত্রে স্পিকারের মাধ্যমে সংসদ নেতার দেওয়া তালিকাই রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেন। পরে সংসদ সচিবালয় থেকে তার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। আর স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদে সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা সরাসরি ভোট দিয়ে থাকেন।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button