আন্তর্জাতিক

প্রতিশোধ শুধু ইরানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না: তেহরান

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাসিম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ শুধু ইরানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়েছে তেহরান। এদিকে ওয়াশিংটন ইরানকে একই ধরনের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বার্তা দিয়েছে বলে দাবি করেছে রিভল্যুশনারি গার্ড।

ইরানের রিভল্যুশনারি গার্ডের রিয়ার এডমিরাল আল ফাদাবি অ্যামেরিকাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘তোমরা প্রতিশোধের জন্য অপেক্ষা কর। আর এ প্রতিশোধ শুধু ইরানেই সীমিত থাকবে না।”

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সহযোগী দেশগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ‘‘এ প্রতিশোধ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে তারা।’’

আল ফাদাবি ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমকে জানান, ‘‘সোলাইমানিকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে সেভাবেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাদেরকে বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, ‘‘তারা বলছে তোমরা যদি প্রতিশোধ নিতে চাও তাহলে আমরা যেভাবে সোলামনিকে হত্যা করেছি সেভাবে নাও।” এই বার্তাটি ইরান কিভাবে পেয়েছে সেটি বিস্তারিত জানাননি ফাদাবি।

গত প্রায় চারযুগ ধরেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই৷ তবে তেহরানে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগের ভূমিকা রেখে আসছে। সুইস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনের একটি চিঠি দেশটির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইরানের কাছে পৌছে দিয়েছে। এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ টেলিভিশনে আলাদা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস অ্যামেরিকার একটি হাস্যকর বার্তা পৌছে দিয়েছে। এই চিঠির জন্য দেশটির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেকে পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।

ইরানের প্রতিক্রিয়া কী হবে ঠিক করে দেয়ার মত অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র নেই বলেও উল্লেখ করেন ফাদাবি। তিনি বলেন, ‘‘অ্যামেরিকাকে অবশ্যই ভয়াবহ প্রতিশোধের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।”

কালো পোশাকে সোলাইমানিকে স্মরণ: অ্যামেরিকা বিরোধি স্লোগান

এদিকে শনিবার নিহত সোলাইমানির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।

ইরাকের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ইমাম কাদহিমের মাজার এলাকা থেকে শোক মিছিলটি শুরু হয়৷ ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আবেদ আবদুল-মাহদিসহ সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

কালো পোশাকে হাজারো মানুষ এ শোক মিছিলে অংশ নেয়। এ সময় তারা ‘অ্যামেরিকা ধ্বংস হোক, ইসরাইল ধ্বংস হোক’ স্লোগান দেয়।

শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারসহ নিরাপত্তারক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মার্কিন বাহিনীর বাগদাদে গড়ে তোলা গ্রিন জোনের গেইট বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ মার্কিন দূতাবাসের প্রবেশপথও বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।

সোলেমানিকে হত্যার পর ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ থামাতে এবং অ্যামেরিকানদের উপর হামলা ঠেকাতেই সোলেমানিকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা যুদ্ধ শুরু নয় বরং যুদ্ধ থামাতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছি।”

এ মুহুর্তে মধ্যপ্রাচ্য আরেকটি যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত নয় জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তবে জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিশেষজ্ঞ আগনেস কালামার্ড বলেন, জেনারেল সোলেইমানি হত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

এদিকে চীন সরকারের মুখপাত্র গেং শোয়াং বলেন তার দেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের বিরোধি। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের অংশ হিসেবে দেওয়া এক বিবৃতিতে একথা বলেন তিনি।

উদ্ভুদ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন ফ্রান্সের ইউরাপ বিষয়ক জুনিয়র মিনিষ্টার অ্যামেলিয়ে ডে মন্টশালিন।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button