গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) সাধারণ সভা অনিয়মিত। দায়িত্ব নেয়ার তৃতীয় মেয়াদের তিন বছরে একবারের জন্য সাধারণ সভার (এজিএম) আয়োজন করেননি সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তবে প্রতিপক্ষের চাপে এবার এজিএম করতে যাচ্ছে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। শনিবার গাজীপুরের একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হবে এই কমিটির অধীনে প্রথম সাধারণ সভা।
এই সভা ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে ফুটবল অঙ্গনে। এই সভাতেই ১৬টি ভোট বাড়ানোর কথা বাফুফের। তিন বছরের আর্থিক বিবরনীও পাশ হতে পারে এখানে।
তবে এ দুটি বিষয়ে প্রবল আপত্তি রয়েছে সালাউদ্দিন বিরোধী শিবিরের। আগের তিনবারের নির্বাচনে কাজী সালাউদ্দিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন ভোটের কয়েক মাস আগে থেকে। এবার পড়েছেন কয়েক বছর আগে থেকেই।
বলতে গেলে ২০১৬ সালের নির্বাচন শেষ হওয়ার বছর পার না হতেই বেজে ওঠে আরেকটি নির্বাচনের দামামা। আগের তিনবারই দেখা গেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সালাউদ্দিন বিরোধীরা একজন সভাপতি প্রার্থী খুঁজে এনে সামনে দাঁড় করিয়েছেন। তবে কোনোবারই কাজী সালাউদ্দিনকে হারাতে পারেননি তারা।
সর্বশেষ নির্বাচনে নরসিংদী-২ আসনের তৎকালীন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনকে ৩৩ ভোটে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন। তবে এবার বেশ আগে থেকেই কোমড় বেঁধে নেমেছে সালাউদ্দিন বিরোধীরা। অনেক আগেই বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন প্রিমিয়ার লীগের নতুন ক্লাব সাইফ স্পোর্টিংয়ের কর্ণধার তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন। যিনি বাফুফের সর্বশেষ নির্বাচনে ছিলেন সালাউদ্দিনের অন্যতম সহযোগী। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে রুহুল আমিন জেলা সংগঠকদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করছেন। তার উদ্যোগেই পুনর্গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন। তিনি এই সংগঠনের সভাপতি। দুটি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে মূলতঃ নির্বাচনী কাজ গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। তাকে দমাতে নানা ভাবে চেষ্টা করছে বাফুফের বর্তমান কমিটি। বার বার জেলার কাউন্সিলরদের ডেকে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সালাউদ্দিন। ঢাকার ক্লাবগুলোতে দিচ্ছেন আর্থিক সহায়তা। ঢাকার সাধারণ সভা নিয়ে গেছেন গাজীপুরে।
এজিএম’এর শুক্রবার রাতেই কাউন্সিলরদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে। পাঁচ তারকা মানের রিসোর্টে কাউন্সিলরদের জন্য নানা আয়োজনও রাখা হয়েছে। জেলার সংগঠকদের সঙ্গে রুহুল আমিনের সখ্যতার কারণে ঢাকায় ভোট বাড়াচ্ছেন সালাউদ্দিন। সাধারণ সভা নিয়ে বাফুফে জরুরি সভা করেছে বৃহস্পতিবার। এই সভায় তারা ফুটবলের ভোটার সংখ্যা বাড়ানোরও একটি পরিকল্পনা করেছে। দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবলে শীর্ষ ক্লাবের ভোট ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৩-তে উন্নীত করতে চাইছে তারা। তৃতীয় বিভাগে সেরকম ৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ ক্লাবকে ভোটাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা আছে বাফুফের। অর্থাৎ ঢাকার ক্লাব ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি ভোট বাড়ানোর প্রস্তাবনা উঠবে বার্ষিক সাধারণ সভায়। এখানে ভেটো দেয়ার কথা সালাউদ্দিন বিরোধীদের। একই সঙ্গে আর্থিক বিবরনীতে ১৭ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। এই রিপোর্ট পাশ নিয়েও বিপত্তি বাধতে পারে।