উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে কালীগঞ্জে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কালীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলায় বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। যোগ্য নেতৃত্ব আর নেতা নির্বাচনে কেউ কেউ নিরব ভূমিকা পালন করলেও অনেকে হয়েছেন সরব।
সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ নভেম্বর।
উপজেলার তুমলিয়া, নাগরী, বক্তারপুর, জাঙ্গালীয়া, জামালপুর, মোক্তারপুর ও বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ পৌর আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে। সেগুলোতে তৃণমূলের চাহিদানুযায়ী পেয়েছে যোগ্য নেতা ও নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূলের প্রত্যাশা ৭টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মতো করে আসন্ন কালীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনেও তারা যোগ্য নেতৃত্ব পাবে।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ছিলেন মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তার মৃত্যুর পর ওই কমিটির প্রথম সহ সভাপতি ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সে ক্ষেত্রে উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি হতে পারেন নতুন সভাপতি। তবে তিনি সভাপতি হলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের জন্য হবে আর্শিবাদ এমনটিই মনে করছেন তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা।
কারণ ইতিমধ্যে তিনি তার নেতৃত্বে স্থানীয় আ’লীগকে সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে তুলেছেন। আর বিগত দিনে নিজ এলাকার উন্নয়নের পরও তিনি দুই দুই বার দায়িত্ব পালন করেছেন সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। সেখানেও তিনি সফল। পাশাপাশি নিজ এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তিনি পেয়েছেন ‘শান্তিকন্যা’ খেতাব।
তবে আসন্ন উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনে সভাপতি নয়, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাধান্য দিচ্ছেন তৃণমূল নেতাকর্মী। আর উপজেলা পর্যায়ে নেতা নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদেই হবে মূলত লড়াই। ইতিমধ্যে এই পদটিকে ঘিরে মূলত কালীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক মো. আবুবকর চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে ওই দুই নামের পাশাপাশি তৃণমূলের মুখে মুখে বর্তমান উপজেলা আ’লীগের আরেক যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশের নামও চাওর হচ্ছে।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূঁইয়া সাবেক ছাত্রনেতা। তিনি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। পরে ওই কলেজের ছাত্র সংসদের জিএস ও ভিপি নির্বাচিত হন। গত দু’বার যথাক্রমে পালন করেছেন উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। বর্তমানেও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। আছেন জেলা আ’লীগের সদস্য হিসেবেও।
যুগ্ম সম্পাদক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ ছাত্র জীবনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ সভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের গত কমিটিতে মোয়াজ্জেম হোসেন প্রচার সম্পাদক এবং বর্তমান কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি আছেন গাজীপুর জেলা আ’লীগের সদস্য হিসেবেও। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়ে বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগেও তিনি ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, উপজেলা আ’লীগের বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক মো. আবুবকর চৌধুরী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি বর্তমানে গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন।
আ’লীগের স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি হিসেবে তাদের প্রথম ও শেষ পছন্দ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ওই মন্ত্রণায়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তবে সম্মেলনে অতি আশা-আকাঙ্খার পদটি হচ্ছে সাধারণ সম্পাদকের। তৃণমূল নেতাকর্মীরা উপজেলায় এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চান যার রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। যিনি তৃণমূলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করতে সক্ষম। তবে বিগত দিনের মতো তারা নেতা নির্বাচনে ভুল করতে চায় না।
বিগত অভিজ্ঞতার আলোকে তৃণমূল নেতারা জানান, সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকির আন্তরিকতায় এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও পৌর আ’লীগে যোগ্য ও সঠিক নেতৃত্ব পেয়েছেন তারা। বিশেষ করে কালীগঞ্জ পৌর আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ছিল তাদের আশা-আকাঙ্খার মূল কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে তারা তাদের প্রত্যাশানুযায়ী গত কমিটির সহ সভাপতি এসএম রবিন হোসনকে পেয়েছেন সভাপতি এবং ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলামকে পেয়েছেন সাধারণ সম্পাদক। তৃনমূলের প্রত্যাশা উপজেলা আ’লীগের পৌর আ’লীগের মত তুমুল জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা কামরুল ইসলামের মত একজন সাধারণ সম্পাদক। তবে সেক্ষেত্রে পুরাতন নয় পৌর আ’লীগের মত নতুনেই তৃণমূলের ভরসা।