আলোচিত

রাঘববোয়ালদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলছে

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ক্যাসিনো–কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ‘রাঘববোয়ালদের’ বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে। দেশে মানিলন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্যও আসছে। এসব ‘রাঘববোয়াল’ যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, তাঁদের বিদেশযাত্রায় তাই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে তিন সাংসদসহ ২৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি দিয়ে এঁদের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সরকারের অন্য সংস্থাগুলোও এ বিষয়ে কাজ করছে। যুবলীগের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, যুবলীগের প্রভাবশালী কয়েক নেতাসহ বেশ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দের আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এঁদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বাবু, তাঁর স্ত্রী সায়মা আফরোজ, তাঁদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সূচনা ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড, স্টার ট্রেডিং কোম্পানি, বাবু এন্টারপ্রাইজ ও সূচনা ডায়িং প্রিন্টিং উইভিং ইন্ডাস্ট্রিজের হিসাব তলব করেছে এনবিআর। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, স্ত্রী পারভীন লুনা, মেয়ে নুজহাত নাদিয়া নীলা এবং তাঁদের প্রতিষ্ঠান ফাইন পাওয়ার সল্যুয়েশন লিমিটেড; যুবলীগের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী এবং তাঁদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লেক ভিউ প্রোপার্টিজ ও রাও কনস্ট্রাকশন; যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, তাঁর স্ত্রী সানজিদা রহমান, তাঁদের দুটি প্রতিষ্ঠান টি-টোয়েন্টিফোর গেমিং কোম্পানি লিমিটেড ও টি-টোয়েন্টিফোর ল’ ফার্ম লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব; স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক কে এম মাসুদুর রহমান, তাঁর স্ত্রী লুতফুর নাহার লুনা, বাবা আবুল খায়ের খান, মা রাজিয়া খান এবং তাঁদের প্রতিষ্ঠান সেবা গ্রীন লাইন লিমিটেড; ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি মুরসালিক আহমেদ, তাঁর বাবা আবদুল লতিফ, মা আছিয়া বেগম এবং স্ত্রী কাওসারী আজাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআর।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে প্রথম দিনই রাজধানীর ইয়াংমেনস ফকিরাপুল ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক (পরে বহিষ্কার করা হয়) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অভিযানে একে একে গ্রেপ্তার হন কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, মোহামেডান ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ মো. লোকমান হোসেন ভূইয়া, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সম্রাটের সহযোগী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমানের (মিজান) ও তারেকুজ্জামান রাজীব।

গ্রেপ্তার হওয়া এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগ ওঠে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের অপকর্মে সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাংসদ, রাজনীতিক, সরকারী কর্মকর্তাসহ বিভিন্নজনের নাম উঠে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর তদন্তের পাশাপাশি এঁদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নামে দুদক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িতদের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে। পরে আরও দুজনকে দলে যুক্ত করা হয়। অনুসন্ধান দলের সদস্যরা গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম যাচাই–বাছাই করে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে। সংস্থার গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে এসব তথ্য যাচাই–বাছাই করা হয়। পাশাপাশি র‍্যাব ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানেরা দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেন। সেসব তথ্য ও কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করে ইতিমধ্যে চারটি মামলা করে দুদক দল। জি কে শামীম, খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তাঁর ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূইয়ার বিরুদ্ধে চারটি আলাদা মামলা হয়।

শুরুতে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানালেও এখন পর্যন্ত দুদকের অনুসন্ধান তালিকায় প্রায় ১০০ জনের নাম এসেছে। দুদক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিনই তালিকায় নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে। সূত্রটি বলছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ অর্জনের অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে উঠছে, তাঁদের প্রত্যেককেই অনুসন্ধানের আওতায় আনবে দুদক। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বড় হয়ে উঠবে না। তাঁদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে।

অভিযোগসংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি অন্য অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পর্যালোচনা করেই তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের নেতৃত্বদানকারী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‍্যাব) সঙ্গে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও দুদকের কার্যক্রমে সমন্বয় করে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে র‍্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ ও বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান বৈঠক করেছেন। বৈঠকে র‍্যাব ও বিএফআইইউ প্রচুর গোয়েন্দা তথ্য দুদককে হস্তান্তর করে।

সূত্র বলছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের অংশ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের বিষয়টি দুদক অনুসন্ধান করবে। অন্য দুটি সংস্থা তাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করবে।

অনুসন্ধান চলাকালে এরই মধ্যে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছে। সেসব অভিযোগে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যাচাই করে দেখছে।

নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করার পাঁচ দিনের মাথায় ভোলা-৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অভিযান শুরুর পরপরই এই সাংসদের নাম আসায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, অনুসন্ধানে দেখা গেছে দুটি ক্লাব থেকে নিয়মিত টাকা পেতেন শাওন। যদিও এ্ দুটি ক্লাবের কোনো পদ পদবি ছিল না তাঁর। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারকৃত কয়েকজনের জবানিতেও শাওনের নাম এসেছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

অন্যদিকে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের রাজনৈতিক ‘গুরু’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন শাওন। তথ্য আছে, কাকরাইলে সম্রাটের দখল করা ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারের পঞ্চম তলায় শাওনের জন্য অফিস করে দেন সম্রাট। এ ছাড়া চাঁদাবাজিসহ অনেক কাজে শাওনের সহায়তা নেন তিনি। শাওনও বিভিন্ন কাজে সম্রাটকে ব্যবহার করতেন।

আরও জানা গেছে, শাওনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুদক। তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সংস্থাটি। অন্য অভিযোগগুলোর অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সামশুল হক চৌধুরী
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পরপরই এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী। চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব হুইপ সামশুলের বিরুদ্ধে ক্লাবটিকে জুয়ার আসরে পরিণত করার অভিযোগ তোলে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেব বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক।

মোয়াজ্জেম হোসেন রতন
সুনামগঞ্জ–১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিপুল অবৈধ অর্থের মালিক। গ্রেপ্তার হওয়া ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

দুদকের হাতে থাকা অভিযোগে বলা হয়, এই সাংসদ কমিশনের বিনিময়ে ঠিকাদার ইলিয়াসকে (জি কে শামীমের সহযোগী) ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। নিজের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উপজেলা ও উপজেলার বাইরের এলাকায় এসব কাজ দিয়েছেন মোয়াজ্জেম। ওই অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, জি কে শামীমের সঙ্গে কিছু কিছু প্রকল্পে ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। রাজধানীর নিকেতনে শামীমের অফিসের পাশেই সাংসদের অফিস আছে। এ ছাড়া বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের উপস্থিতিতেই এসব অভিযোগ উঠে।

ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট
ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট রাজধানীর অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রক হিসেব আলোচনায় ছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। রাজনৈতিক পরিচয় ও পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধ জগতের অপ্রতিরোধ্য সম্রাট হয়েছিলেন তিনি। রাজধানীর কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অফিস খুলে অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। একসময় ‘গডফাদার’দের পক্ষে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-তদবির করলেও পরে রাজনৈতিক পর্যায়ে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা থেকে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর আবারও আলোচনায় আসে সম্রাটের নাম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করছিলেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার প্রধান নিয়ন্ত্রকই হলেন সম্রাট। শুরুতে কয়েক দিন কাকরাইলে নিজের অফিসে থাকলেও পরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

গ্রেপ্তারের পর বন্য প্রাণীর চামড়া রাখার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। অস্ত্র ও মাদক রাখায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। দুই মামলায় সম্রাটকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‍্যাব। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তাঁর কাছে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা আছে। সূত্র বলছে. জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানিয়েছেন ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি থেকে তিনি এই বিপুল পরিমাণ টাকা উপার্জন করেছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর তিনি কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে নগদ টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু কোথায়, কার কাছে রেখেছেন, সে বিষয়ে মুখ খুলছেন না তিনি।

দুদকের অনুসন্ধানেও এখন পর্যন্ত সম্রাটের মাত্র ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার নথিপত্র পাওয়া গেছে। তাঁর বিপুল সম্পদের তথ্য উদঘাটনে চেষ্টা করছে সংস্থাটি। তবে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে কারাগারে থাকা সম্রাটের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক।

এনামুল হক আরমান
সম্রাটের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি আরমান। ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির টাকার বড় অংশ আরমানের কাছে রাখতেন সম্রাট। ‘লাগেজ পার্টি’ থেকে যুবলীগ, ক্যাসিনো ও সিনেমা প্রযোজক হয়ে আরমান দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সব জায়গা।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকে বিদেশ থেকে ‘লাগেজ পার্টির’ আনা ইলেকট্রনিক পণ্য বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন। পরে নিজেই লাগেজ পার্টির কারবারে যুক্ত হন। ২০১৩ সালে যুবলীগের পদ পেয়ে অল্প সময়ে গড়ে তোলেন বিত্তবৈভব। জুয়া-ক্যাসিনোর টাকায় নামেন সিনেমা প্রযোজনায়ও।

সম্রাটের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সুবাদেই ২০১৩ সালে যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতির পদ পান আরমান। সম্রাটের ছত্রচ্ছায়ায় ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনো ও জুয়া-বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রকে পরিণত হন আরমান। তিনিই সম্রাটকে ক্যাসিনো ব্যবসায় আগ্রহী করেন বলে প্রচার আছে। সম্রাটের হয়ে পুরো ক্যাসিনো ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন আরমান।

৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে সম্রাটের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরমানও। গ্রেপ্তারের সময় মদ্যপ ছিলেন আরমান। তাঁর কাছে মাদকও পাওয়া যায়। সে কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে ছয় মাসের কারদণ্ড দেন।ৎ

গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম
তিনি নিজকে পরিচয় দিতেন যুবলীগের সমবায়বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। আবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবেও পরিচয় দিতেন। চলতেন ছয়জন সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের বড় কাজের প্রায় সবই ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানের কব্জায়। গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন তাঁর কার্যালয় থেকে নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজপত্র, নয় হাজার মার্কিন ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার, একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং মদের বোতল জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইন এবং মাদক আইনে মামলা করা হয়। এসব মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ও র‍্যাব।

২৯৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তবে দুদক জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ওই পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পা্ওয়া গেছে। প্রতিদিনই নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেসব তথ্য তদন্তের সময় মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড বর্তমানে এককভাবে গণপূর্তের ১৩টি প্রকল্পের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে। আবার যৌথভাবে আরও ৪২টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত, যা সারা দেশে চলমান অধিদপ্তরের মোট প্রকল্পের ২৮ শতাংশ। সব কটি প্রকল্পের চুক্তিমূল্য ৪ হাজার ৬৪২ কোটি ২০ লাখ টাকা, যার মধ্যে ১ হাজার ৩০১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হন ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের প্রথম দিনেই। ইয়াংমেনস ফকিরাপুল ক্লাবের ক্যাসিনো চালাতেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুদক মাঠে নেমেছে তাঁর অবৈধ সম্পদের খোঁজে।

সূত্র জানায়, যুবলীগের নেতা হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাঁটিয়ে খিলগাঁও ও শাহজাহানপুরে লেগুনাস্ট্যান্ডে এককভাবে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। আরামবাগ এলাকার দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ও সংলগ্ন এলাকার ফুটপাত থেকে চাঁদা তোলা, মতিঝিলে ফুটপাতে চাঁদাবাজি ও পাড়া-মহল্লায় ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণেও আধিপত্য বিস্তার করেছেন খালেদের লোকজন। সেখান থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা ওঠানো হতো।

২১ অক্টোবর খালেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এখন পর্যন্ত তাঁর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুই প্রকৌশলী
গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জি কে শামীমের বিরুদ্ধে যোগসাজশের। তাঁদের ঘুষ দিয়ে শামীম গণপূর্তের বড় কাজগুলো বাগিয়ে নিয়েছেন বলে দুদকে অভিযোগ আছে। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুলের বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধানাধীন ছিল। কিন্তু জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ নথিভুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছিল সংস্থাটি। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

প্রশান্ত কুমার হালদার
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক। এর আগে তাঁর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে এনবিআর। তাঁর বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। এ ছাড়া রিলায়েন্স ফিন্যান্স লিমিটেডের দুর্নীতির অভিযোগে আরেকটি অনুসন্ধান চলছে দুদকে।

কাজী আনিসুর রহমান
যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ অর্জনের অভিযোগ আছে। যুবলীগের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত আনিস কমিটি–বাণিজ্যসহ নানাভাবে অর্থ আয় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ও তাঁর স্ত্রী সুমি রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

এনামুল হক এনু ও রূপন ভূইয়া
চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক ও তাঁর ভাই থানা রূপন ভূঁইয়ার বাড়িতে অভিযান চালায় র‍্যাব। সেখান থেকে টাকা ও গয়না জব্দ করার পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনামুলের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে সব মিলিয়ে পাঁচ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, চার কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র‍্যাব।

অভিযান শেষে র‍্যাব জানিয়েছিল, এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার। ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকে ক্যাসিনোর টাকা এনে এনামুল বাসায় রাখতেন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকা রাখার জায়গাও হতো না। তাই টাকা দিয়ে তিনি স্বর্ণালংকার কিনতেন।

অভিযান শেষ হওয়ার প্রায় এক মাসের মধ্যেও এঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে, ওই ঘটনায় সাতটি মামলা হয়েছে। সূত্রাপুর থানায় মানি লন্ডারিং ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি করে চারটি মামলা করে র‍্যাব। ওয়ারী থানায় দুটি অস্ত্র আইনে এবং গেন্ডারিয়ার থানায় মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করা হয়।

ওয়ারী থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় বলা হয়, চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে র‍্যাব জানতে পারে, ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের অবৈধ ক্যাসিনোর অংশীদার এনামুল হকের বিশ্বস্ত কর্মচারী আবুল কালাম ও হারুন অর রশীদের বাসায় অর্থ আছে। র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ সোনা, আগ্নেয়াস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় দুই ভাইকে আসামি করা হয়েছে।

দুদকও দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে। দুদকের মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়া
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কক্ষ ক্যাসিনোর জন্য ভাড়া দেওয়ায় ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে তাঁকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদকে দৈনিক ৭০ হাজার টাকায় ক্লাবের কক্ষ ভাড়া দিয়েছিলেন লোকমান। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালনা কমিটি একটি রেজ্যুলেশনের ভিত্তিতে কক্ষ ভাড়া দেয়। অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড ও কমনওয়েলথ ব্যাংকে লোকমানের ৪১ কোটি টাকা গচ্ছিত আছে বলে জানায় র‌্যাব।

লোকমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ)
কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম গ্রেপ্তার হন ২১ সেপ্টেম্বর। অস্ত্র ও মাদক আইনে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীতে কলাবাগান ক্লাবই প্রথম আন্তর্জাতিক মানের ক্যাসিনো চালুর উদ্যোগ নেয়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্যাসিনো বন্ধ হয়ে যায়। কলাবাগান ক্লাবের আদলে প্রথমে ভিক্টোরিয়া ও পরে একে একে ওয়ান্ডারার্স, ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা, মোহামেডান, আরামবাগে স্লট মেশিন বসে।

সূত্রের তথ্যমতে, স্লট মেশিন জুয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মানের বোর্ড, নেপাল থেকে প্রশিক্ষিত নারী-পুরুষদের নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ক্লাবগুলোয় বাকারা (তাসের খেলা) নামের একটা খেলা হতো, পরে যুক্ত হয় রুলেট (চাকার মতো বোর্ড) এবং আরও কয়েকটি খেলা। এই ক্লাবের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক নাজমুল করিম ওরফে টিঙ্কু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মোহাম্মদপুরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম। এখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা কারবারি, পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যাতায়াত ছিল। নাজমুল করিম মারা যাওয়ার পর টাকাপয়সা হস্তগত করায় মহল্লার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। এর সমাধান না হওয়ায় ক্লাবটি একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন কলাবাগান ক্লাবের আয় ছিল প্রায় কোটি টাকা। আর ক্লাবটির নিয়ন্ত্রণ ছিল শফিকুল আলমের হাতে।

সেলিম প্রধান
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে এনে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁকে নিয়ে তাঁর অফিস ও বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সমপরিমাণ ২৩টি দেশের মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইনে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে দুটি মামলা হয়েছে।

এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ
এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক। ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেও তিনি বোর্ড সভায় নিয়মিত যেতেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া অসংখ্যবার বিদেশে গেছেন।

সাঈদ আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। ফকিরাপুল ও আরামবাগের অনেকেই তাঁকে ‘ক্যাসিনো সাঈদ’ নামে চেনেন। ওয়ান্ডারার্স ক্লাবটি চালাতেন মমিনুল হক। এই ক্লাবে নিয়মিত ক্যাসিনো, জুয়া, মাদকের আসর বসত। এ ছাড়া আরও চারটি ক্লাবের ক্যাসিনোর ব্যবসা ছিল সাঈদের নিয়ন্ত্রণে। তাঁর সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। এর অংশ হিসেবেই তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

 

সূত্র: প্রথম আলো

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Získejte skvělé tipy, triky a recepty na našem webu o lifestylových návodech, vaření a užitečných článcích o zahradničení. Učíme vás, jak si užít každodenní život plně a efektivně! Zůstaňte s námi a objevte nové způsoby, jak vylepšit svůj život. 5 užitečných zvyků Japonců, které jim pomáhají žít Jak vařit těstoviny s vepřovým tukem" - Výhody recyklace ořechových skořápek pro výrobu cenného hnojiva Lahodný a výživný recept na kuřecí polévku k obědu Největší mýty o fermentovaných potravinách a kyselých okurkách, kterému všichni Ne písek, ale sůl: Cínidlo na náledí 5 chyb při výrobě tvarohových koláčů: Proč pokrm Jak správně uklidit dům, když je někdo Trhané maso: zajímavý recept na výdatný pokrm Sladká pochoutka může být jedovatá: Způsobuje přibírání na Lepší než v obchodě: jak chuťně nasolit Perfektní pečení pro zaneprázdněné hospodyňky: recept od Liny Charlotty Vložte tyto 8 dovedností do svého každodenního života Je možné instalovat kamna na dřevo v bytě? Příprava 6 potravin, které neobsahují téměř žádné kalorie: Jak správně vařit ovesnou kaši: Kuchař odhalil Vepřové koleno pečené v troubě - lahodný Perfektní snídaně, která pomůže zhubnout mužům i Jak udělat borsč: jasné červený triky šéfkuchaře pro hostesky Jak vařit Vánoční rolky na pánvi Cvičení a make-up: Co se stane s vaší pletí, když Tipy a triky pro kuchyni, zahradu a zdravý životní styl: Objevte nové recepty, lifestylové hacky a užitečné články pro svou zahradu na našem webu.