পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রাজধানীর পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগের আংশিক সত্যতা মিলেছে।
‘ধর্ষণ’ ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘গর্ভপাত’ করানোর অভিযোগে ভুক্তভোগী এক নারী পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দফতরে অভিযোগ করার পর ডিএমপি তদন্ত করে এ অভিযোগের আংশিক সত্যতা পায়।
আইজিপির দফতরে ওই নারীর করা অভিযোগ তদন্ত করেন ডিএমপির (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোনালিসা বেগম। তিনি বলেন, ‘ওই নারীর অভিযোগের বিষয়টি আমি তদন্ত করেছি। আংশিক সত্যতা পেয়েছি। তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। আমি ৮ থেকে ১০ দিন আগে ডিএমপিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’ তদন্ত প্রতিবেদনটি গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দফতরের হেড কোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সোমবার (৩০ সেপ্টম্বর) অভিযোগকারী নারী ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘ওসি মাহমুদুল হক এবং আমার গ্রামের বাড়ি একই এলাকায়। তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। ২০১৭ সালে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি আমাকে ঢাকায় নিয়ে যান। একটি হোটেলে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে আমার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করেন। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার সস্পর্ক ছিল। আমাকে কলেমা পড়ে বিয়েও করেছেন। কিন্তু স্বীকৃতি দেন না। এই বিষয়টা আমি মতিঝিলের ডিসি, এডিসিসহ সবাইকে জানিয়েছি। আমি সবাইকে বলেছি কিন্তু কেউ প্রতিকার করেননি, বিচার করেননি। বাধ্য হয়ে আইজিপির কাছে অভিযোগ করেছি।’
আইজিপির কাছে করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘কলেজে পড়ালেখা করা অবস্থায় ওসি মাহমুদুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে ফোনে কথা হতো। ২০১৭ সালের গত ২১ সেপ্টেম্বর ওসি তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় ডেকে আনেন। ওই নারী ঢাকায় আসার পর ওসি মাহমুদুল তাকে পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলের একটি রুমে নিয়ে যান। হোটেলে তাকে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। এরপর ওই নারীকে অচেতন করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে ওই নারীর জ্ঞান ফেরার পর তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ সময় ওসি তাকে জানান, তিনি তাকে ভালোবাসেন। তাকে বিয়ে করতে চান। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় বলে নানা অজুহাতে এমনকি কোরআন শরীফের ওপরে হাত রেখে ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিয়ের কথা বলে পরে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় ওসি। গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই নারী বুঝতে পারেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এ সময় ভুক্তভোগী বিষয়টি মাহমুদুলকে জানালে তিনি বিয়ের নামে গর্ভপাত করতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। পরে ওই নারী বারবার বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে ওসি মাহমুদুল একপর্যায়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। উপায় না পেয়ে ওই নারী ওসির অফিসে যান এমনকি ওসির বাবার কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান। এরপরও বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় গত ১২ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। ১ আগস্ট আইজিপি বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওসি মাহমুদুল হকের কাছে জানতে চেয়ে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত হয়েছে।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন