টঙ্গীতে ভূমিদস্যুদের পক্ষে পুলিশ ও ছাত্রলীগ: মিথ্যা অভিযোগে মামলা চাঁদাবাজির!
বিশেষ প্রতিনিধি : টঙ্গীতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবীর মিথ্যা অভিযোগে থানায় মামলা দিয়ে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারের ভয়ে আসামীপক্ষের পালিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে খালি মাঠে জমি দখলের চেষ্টা চালায় একটি হাউজিং কোম্পানী। আদালতের নিষেধাজ্ঞাকেও তোয়াক্কা করছে না কোম্পানীটি।
জমির মালিক আক্তার হোসেন জানান, তারা কয়েকজন চাকুরিজীবী টঙ্গীর খাঁপাড়া রোডে সাতাইশ মৌজায় ২০ শতাংশ জমি কিনে দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করছেন। তাদের জমির পাশেই কথিত মা আমেনা সিটির জমি। আমেনা সিটি কোন নিবন্ধিত কোম্পানী নয়। একজন ভূমিদস্যু মা আমেনা সিটির সাইনবোর্ড টানিয়ে জোরপূর্বক মানুষের জমি দখল করছে। সাইনবোর্ডে সেনাবাহিনীর মেজর থেকে শুরু করে বিগ্রেডিয়ার পর্যন্ত কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এসব নামের পাশে দেয়া মোবাইল নম্বরগুলোতে ফোন দিলে কখনো রিসিভ হয় না।
মা আমেনা হাউজিং কোম্পানীটির পক্ষ নিয়ে টঙ্গী থানা ছাত্রদীগ সভাপতি মেহেদী হাসান কানন মোল্লা সাধারণ মানুষের জমি দখল করছেন বলেও জমির মালিকপক্ষ অভিযোগ করেন। সম্প্রতি ছাত্রলীগ সভাপতি কানন মোল্লা একটি জমির বাউন্ডারি ও সাইন বোর্ড ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন।
এঘটনায় জমির মালিকপক্ষ কানন মোল্লার বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
অবশেষে জমির মালিকপক্ষ গাজীপুর আদালতে কানান মোল্লার বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।
পৃথক আরেকটি দেওয়ানি মামলায় আদালত ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ছাত্রলীগ নেতার শ্যাল্টারে জমিতে নির্মাণ কাজ করছে ভূমিদস্যু চক্রটি।
এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর জমির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় চাঁদা দাবীর মিথ্যা অভিযোগে মামলা (নং-৪) দায়ের করে আমেনা সিটি কর্তৃপক্ষ। মামলার চার পৃষ্ঠার আরজিতে ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে গুলি-বোমা ফাটিয়ে কথিত জমি দখলের বিশাল কল্প কানিহী বর্ণনা করা হয়েছে। আরজিতে জাল দলিলে জমির মালিকানা দাবীর অভিযোগ আনা হলেও দলিলের কোন নম্বর উল্লেখ করা হয়নি।
আক্তার হোসেন জানান, এই মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে তারা জমি রক্ষার পরিবর্তে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই সুযোগে আমেনা সিটি কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে টঙ্গী থানা ছাত্রলীগ সভাপতি কানন মোল্লা দলবল নিয়ে জমি দখলের মহোৎসব চালায়। অবশেষে তারা আদালতের শরণাপন্ন হলে বিজ্ঞ আদালত জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এই নিষেধাজ্ঞাকেও কোন তোয়াক্কা করছে না আমেনা সিটি কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আমরা; থানায় অভিযোগও দিলাম আমরা, অথচ আমাদের মামলা না নিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা নেওয়া হলো। তিনি আফসোস করে বলেন, পুলিশের এই বিমাতাসূলভ আচরণে আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। যে কষ্ট প্রকাশ করার ভাষা আমাদের জানা নেই। উত্তরা প্রবর্তন সিটির মাহবুব ও আমেনা সিটির জালাল ছাত্রলীগ ও পুলিশের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এদিকে এব্যাপারে আমেনা সিটি কর্তৃপক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তাদের সাইন বোর্ডে দেয়া মোবাইল নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি এমদাদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা নিয়েছি।