‘করোনা চলে গিয়েছে, মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই’, রাজ্যবাসীকে ‘পরামর্শ’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গোটা ভারতে যখন ফের করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে তখন রাজ্যবাসীকে মাস্ক না পরামর্শ দিলেন আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তাঁর দাবি, আসামে আর করোনা নেই। অতএব মাস্ক পরারও কোনও প্রয়োজন নেই।
এক সাক্ষাৎকারে হিমন্ত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, “আসামে যখন করোনাই নেই, তা হলে কেন শুধু শুধু মাস্ক পরছেন রাজ্যবাসী! এতে বরং আরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।” সারা দেশে যখন করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন, তখন এক রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী ভাবে এই পরামর্শ দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই।
কেন্দ্র যেখানে সব রাজ্যকে করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ করতে বলছে, জনগণকে মাস্ক পরতে বারংবার পরামর্শ দিচ্ছে, আসামের ক্ষেত্রে বিষয়টা কেন আলাদা হবে? এ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে হিমন্ত বলেন, “কেন্দ্র নির্দেশ দিতেই পারে। নির্দেশিকাও জারি করতে পারে। কিন্তু আসামে তো কোভিড-ই নেই! যখন কোভিড আবার ফিরবে, রাজ্যবাসীকে ফের মাস্ক পরতে বলব।”
সব রাজ্য যেখানে মাস্ক পরা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ করছে, এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তাঁর এই সিদ্ধান্ত কি ঠিক? হিমন্ত বলেন, “কোভিড যদি রাজ্যে না-ই থাকে, আমার কী করার আছে!”
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হিমন্ত জানিয়েছেন, রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অসম সরকার সেই কাজ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে। এর পরই তিনি বলেছেন, “লোকে যদি মাস্ক পরে, তা হলে বিউটি পার্লারগুলো চলবে কী করে? বিউটি পার্লারগুলোকেও তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সে কারণেই রাজ্যবাসীকে সাময়িক ছাড় দিয়েছি। যে দিন মনে করব ফের কোভিড ঢুকেছে রাজ্যে, সে দিন রাজ্যবাসীকে বলব মাস্ক পরতে। তখন নির্দেশ অমান্য করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে।”
রাজ্যে কোভিড না থাকায় বিহু উৎসব পালনেও কোনও নিষেধাজ্ঞা রাখছে না তাঁদের সরকার। এ কথাও জানিয়েছেন আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্য মহাসমারোহে বিহু উৎসব পালিত হবে। আমার বিশ্বাস এই উৎসব পালনে কোভিড নিয়ে কোনও আতঙ্ক কাজ করবে না রাজ্যবাসীর মনে।” তিনি যে মাস্ক না পরার পরামর্শ দিচ্ছেন, এ ব্যাপারে কি রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন? এ ক্ষেত্রেও জোরের সঙ্গে তিনি জানান, “আলোচনা কোনও প্রয়োজন নেই। যে দিন থেকে রাজ্যে প্রতি দিন ১০০ জন করে আক্রান্ত হবেন, সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্যবাসীকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেব।”