গাজীপুর

হেফাজতের হরতাল: গাজীপুরে জনজীবন স্বাভাবিক, হরতালের সমর্থনে নেই কর্মী-সমর্থকরা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি ও সরকার–সমর্থকদের হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনায় রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

তবে সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল, মার্কেট ও দোকানপাটে মানুষয়ের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দূরপাল্লার চেয়ে স্থানীয় যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের চলাচল বেশি রয়েছে।

চন্দ্রা এলাকায় হরতালের সমর্থনে হেফাজতের মিছিল।

 

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় রোববার বেলা অনুমানিক ১১টার দিকে হরতালের সমর্থনে ছোট একটি মিছিল হলেও হরতালের সমর্থনে অন্য কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। সড়কে নেই হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা।

অপরদিকে হরতালের বিপক্ষে বিভিন্নস্থানে সরকারদলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার থেকে গাজীপুর মহানগরের হাড়িনাল পর্যন্ত চলাচলকারী যাত্রীবাহী “তাকওয়া”পরিবহনের চালক জহিরুল হক বলেন, অন্যান্য দিনের মতো সকাল থেকেই একাধিকবার যাতায়াত করেছেন। কোথাও কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়নি। তবে দূর পাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন ছিল খুব কম। হঠাৎ করে দু একটা দূরপাল্লার যানবাহন দেখা গেছে।

হরতালের প্রতিবাদে মাওনা চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল।

চন্দ্রা থেকে ময়মনসিংহগামী ট্রাকের চালক বাচ্চু মিয়া জানান, সকাল ১১টার দিকে হরতালের সমর্থনে চন্দ্রা ফ্লাইওভার এলাকায় মিছিল হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে লাঠিসোটা নিয়ে সমর্থকেরা সড়কের একপাশে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছে। মিছিলটি চন্দ্রা চৌরাস্তা প্রদক্ষিণ করায় চারপাশের যানবাহন চলাচল কিছু সময় যানজটে আটকা পড়ে।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন মজুমদার বলেন, হরতাল সমর্থকেরা চন্দ্রা মোড়ে আকষ্মিক মিছিল করে ৭ থেকে ৮ মিনিট পর সড়ক ছেড়ে চলে যায়। হামলা-সংঘর্ষ বা ভাংচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল ও গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিনসহ আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন সহযোগী ইউনিটের নেতাকর্মীরা হরতালের প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় এক ঘন্টা পর পর বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বেলা ১১টায় শ্রীপুর শহরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টায় দলীয়ং কার্যালয়ে পথসভায় বক্তব দেন জেলা আওয়ামীলীগের সাহিত্য ও সাংষ্কৃতিক সম্পাদক কফিল উদ্দিন মন্ডল, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির হিমু, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লা, আলমগীর হোসেন, যুবলীগ নেতা সেলিম শেখ, ছাত্রলীগ নেতা মাসুম মন্ডল, কাউন্সিলর হাজী কামাল প্রমূখ।

কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস.এম রবিন হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন সহযোগী ইউনিটের নেতাকর্মীরা হরতালের প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেল শেখ জানান, সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও কার্যক্রম নিশ্চিত করতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে পর্যাপ্ত পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। জেলার কোথাও অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটেনি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন (জিএমপি) পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির জানান, যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট খোলাসহ জনজীবন স্বভাবিক রাখতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েই মহানগরের প্রত্যেকটি এলাকায় পুলিশ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেও বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়ে রাখা হয়েছে। দুপুর ২টা পর্যন্ত মহানগরের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button