গাজীপুরের পাঁচ উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ২,৬৮৮ জন (তালিকাসহ)
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামের চূড়ান্ত একটি তালিকা প্রকাশ করেছ সরকার। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী গাজীপুরের পাঁচ উপজেলায় ২ হাজার ৬’শ ৮৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশের ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানের নাম।
তালিকায় গাজীপুরের পাঁচ উপজেলার মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি গাজীপুর সদর উপজেলায় ৮২৯ জন, এরপর যথাক্রমে কাপাসিয়ায় উপজেলায় ৫৯৭ জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫৮৯ জন, শ্রীপুর উপজেলায় ৪৫৮ জন এবং কালিয়াকৈর উপজেলায় ২১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।
তৃণমূল থেকে যাচাই-বাছাইয়ের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকার প্রথমটি প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে এন্ট্রি করেছি সারা দেশের ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম। তবে প্রায় ৩৫ হাজার জনের বেসামরিক গেজেট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অনুমোদন না থাকায় এ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।’
ইতিমধ্যে এসব গেজেট নিয়মিতকরণের উদ্দেশ্যে ৪৩৪ উপজেলার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে মন্ত্রণালয়। যাচাই-বাছাই ও আপিল শুনানি শেষে চলতি বছরের ৩০ জুন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় প্রকাশ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করলেও তাঁদের কোনো তালিকা করতে পারিনি। বিলম্ব হলেও সে তালিকা করা শুরু করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রকাশিত তালিকায় যদি কারও কোনো তথ্যে মিল না থাকে তাহলে ভাতা পেতে বিভ্রান্ত হতে পারে। সেজন্য আমরা এক বছর যাচাই-বাছাই করেছি। শতবাগ নির্ভুল করার জন্য সময় নিয়েছি। তারপরও ভুল থাকতে পারে। তবে সেই ভুল তেমন বড় কোনো কিছু হবে না।
তিনি বলেন, আজকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৫ জনের নাম প্রকাশ করা হলো। বাকিদের যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রকাশ করা হবে। মোট ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি হবে না বলে জানান মন্ত্রী।
স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে বারবারই। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হলে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ আবেদন আসে। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় শেষ পর্যন্ত নতুন তালিকা প্রকাশ স্থগিত করতে হয় সরকারকে।
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ঢাকা বিভাগের বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ৩৭ হাজার ৩৮৭ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ৩০ হাজার ৫৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ হাজার ৫৬৩ জন, খুলনা বিভাগে ১৭ হাজার ৬৩০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ হাজার ৫৮৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ হাজার ৮৯৯ জন, রংপুর বিভাগে ১৫ হাজার ১৫৮ জন, সিলেট বিভাগে ১০ হাজার ২৬৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এছাড়াও ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামের তালিকাও একই সঙ্গে প্রকাশ করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকা
https://www.gazipurkontho.com.bd/wp-content/uploads/2021/03/বীর-মুক্তিযোদ্ধাদের-সমন্বিত-তালিকা.pdf