আলোচিতশিক্ষা

‘অবিবেচক’ সিদ্ধান্ত বাতিল, সাত কলেজের পরীক্ষা চলবে

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষা চলবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

সিদ্ধান্তের পর বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

বুধবার দুপুরের পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ কে এম মাকসুদ কামালের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। বৈঠকের পর ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, ‘‘সাত কলেজের পরীক্ষা চলবে তবে পরীক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন না। আবাসিক হল খোলা হবে না। পরীক্ষার হলে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানতে হবে।’’

তিনি জানান বৈঠকে আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তবে সিদ্ধান্ত হয়নি।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি ২২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেনে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ১৭ মে খুলে দেয়া হবে। আর ২৪ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস শুরু হবে। ২৪ মে এর আগে কোনো পরীক্ষা নেয়া যাবে না বলেও জানান তিনি। এরপর এই সাতটি কলেজসহ আরো যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা চলছিল তারা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলমান পরীক্ষা স্থগিত করে।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরীক্ষা চালু রাখার দাবিতে আন্দোলনন শুরু করেন। রাতে তারা চলে গেলেও বুধবার সকাল থেকে তারা আবার অবস্থান নেন। সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের কথা বলে তাদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করা হলেও তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। ফলে দুপুরের পরই শিক্ষামন্ত্রী বৈঠক করে সাত কলেজের পরীক্ষা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন।

দুই দিন পরীক্ষা স্থগিতের কারনে কয়েকটি বিষয়য়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, এরইমধ্যে ওইসব বিষয়ের পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তার মতে, সামান্য ক্ষতি হলেও তা এখন কাটিয়ে উঠা যাবে।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘‘অবিবেচক সিদ্ধান্তের কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিল।’’

আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, অনার্স তৃতীয় বর্ষ, ফাইনাল ইয়ার ও মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ করেই পরীক্ষা স্থগিত করায় প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে পড়েন। তাই তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন। তারা এইসব কলেজে তারা ২৫টি বিষয়ে পড়াশুনা করেন।

তিনি জানান মাস্টার্সের পরীক্ষা বলতে গেলে প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কিছু বিষয়ের মৌখিক ও প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা বাকি আছে৷ তৃতীয় বর্ষের চারটি পরীক্ষা হয়ে গেছে, বাকি আছে তিনটি। আর ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা কারুর বুধবার এবং আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শেষ হওয়ার কথা ছিলো।

এমনিতেই কলেজগুলোতে সেশনজ্যাম৷ ২০১৯ সালে এই পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল থাকলেও সেই পরীক্ষা এখন হচ্ছে। এই পরীক্ষা শুরু করতেও এর আগে তাদের আন্দোলন করতে হয়েছে।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘‘আমাদের দাবি ছিল পরীক্ষা চলমান রাখার। দাবি মেনে নেয়ায় আমরা এখন পড়ার টেবিলে ফিরে গেছি।’’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখন হলে থাকছি না। ভাড়া বাসায় থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি। তাই হলে থাকতে না দিলেও আমাদের সমস্যা নেই৷ হাঠাৎ স্থগিতের কারণে দুইটি পরীক্ষা হয়নি। তারও তারিখ এখন দিয়ে দিয়েছে।’’

এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর ভাচুয়াল বৈঠকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও হল খুলে দেয়ার জন্য ছাত্রদের আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হলেও নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

সূত্র: ডয়চে ভেলে

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button