বিনোদন

নায়ক ফারুক হাসপাতালে, করোনা আক্রান্ত মেয়ে আইসোলেশনে

গাজীপুর কণ্ঠ, বিনোদন ডেস্ক : চিত্রনায়ক ও সাংসদ বাবা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের শারীরিক অবস্থা যখন ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে, তখনই জানা গেল তাঁর মেয়ে ফারিয়া তাবাসসুম পাঠান তুলসী করোনায় আক্রান্ত। মেয়ে যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় আইসোলেশনে আছেন, ঠিক সে সময় তাঁর নায়ক বাবা হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। মেয়েকে দেখাশোনা করছেন তাঁর ভাই রওশন হোসেন পাঠান শরৎ আর ফারুককে তাঁর স্ত্রী ফারহানা পাঠান।

সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে এমনটাই জানিয়েছে নায়ক ফারুক।

তুলসী লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক আর ইউসিএল ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসি নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ছেলে রওশন হোসেন পাঠানও লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট মিনিস্টার থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। এই অভিনেতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত তুলসী। বাসায় বাবার সংস্পর্শে থাকার কারণে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেড় মাস সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় ফেরেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পী ফারুক। দেশে ফেরার ১১ দিনের মাথায় করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। করোনায় আক্রান্তের খবর জানতে পারলে গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার আগের কয়েক দিন জ্বর ও কাশি ছিল ফারুকের। ৬ নভেম্বর কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়। নেগেটিভ আসে। এর মধ্যে ৯ নভেম্বর সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন। পরদিন আবার জ্বর আসে। এদিকে শরীরের ইলেকট্রোলাইট অনিয়ন্ত্রিত ছিল। হালকা কাশিও ছিল। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরাও চিন্তায় পড়েন। এরপর আবার কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়। এরপর ফলাফল হাতে পেলে জানা যায়, ফারুকের কোভিড-১৯ পজিটিভ। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে ২১ নভেম্বরে আবার ফারুকের কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়। পরদিন পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেলে জানতে পারেন এই দফায়ও তিনি কোভিড-১৯ পজেটিভ।

ফারহানা পাঠান বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় কোভিড-১৯ পজেটিভ হলেও ফারুকের শারীরিক অবস্থা বেশ উন্নতির দিকে। চিকিৎসকেরা যেভাবে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, তাতে মুগ্ধ আমরা। এর মধ্যে আবার টেস্ট করানো হবে। নেগেটিভ এলেই তাঁকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেবেন।’

করোনায় আক্রান্ত স্বামীকে কাছে থেকে সেবা করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান। তিনি বললেন, ‘আমি রোগকে ভয় পাই না। সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখেই আমি ফারুকের পাশে আছি। শুরুতে তো এমনটাও ভেবেছিলাম, ফারুকের সঙ্গে যদি আমারও কোভিড-১৯ পজেটিভ হয়, তাহলে দুজন একসঙ্গে থাকতে পারব। কিন্তু তার দরকার পড়েনি। আমি এমনিতেই ওর পাশে থেকে সেবা করতে পারছি। এরই মধ্যে আমার কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ নেগেটিভ এসেছে। মেয়ের পজেটিভ হওয়াতে কিছুটা টেনশনে ছিলাম। কিন্তু কোনো জটিলতা না থাকায় স্বস্তি পেয়েছি। আর ছেলে পাশে আছে, দেখাশোনা করছেন, তাই কোনো চিন্তা নেই।’

কথায় কথায় ফারহানা পাঠান জানালেন, ফারুক এখন নিজের পছন্দের সব ধরনের খাবার খেতে পারছেন। শরীরেও কোনো ধরনের জটিলতা নেই। সবকিছু এভাবে চললে হয়তো দু–এক দিনের মধ্যে বাসায় ফিরতে পারবেন।

ফারুক জানান, ‘বিষয়টা আজব। আমি খুব টেনশনে ছিলাম ওকে নিয়ে। সাধারণত করোনা রোগীদের সংস্পর্শে কাউকে আসতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ও আমার শরীরের কথা ভেবে আমার সঙ্গেই ছিল। শনিবার তারও করোনা টেস্ট করা হয়েছে। ভয়ে ছিলাম ওরও পজেটিভ আসে কি না। অবাক করা ব্যাপার হলো ও করোনা নেগেটিভ। সবই আসলে আল্লাহর ইচ্ছা।’

ফারুক জানান, দ্বিতীয় দফায় করোনা পজেটিভ হলেও আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন তিনি। দোয়া চেয়েছেন সবার কাছে। একই সঙ্গে করোনাক্রান্ত মেয়ে তুলসীর জন্যও দোয়া চেয়েছেন এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ।

প্রায় পাঁচ দশক ধরে ঢালিউড মাতিয়েছেন ফারুক। অভিনয় ছাড়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।

 

সূত্র: প্রথম আলো

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button