সারাদেশ

পলাশে বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশ জুট মিলের উৎপাদন, কর্মহীন ৩ হাজার শ্রমিক

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নরসিংদীর পলাশে বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশ জুট মিলের উৎপাদন। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন এ মিলটি ছিল পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে। মিলটি বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে গেল মিলে কর্মরত প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কর্মচারী।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) রাত ১০টায় মিল কর্তৃপক্ষ বন্ধ ঘোষণার নোটিশ মিলের প্রধান গেইটে টানিয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘ দিনের কর্মস্থল মিলটির বন্ধের নোটিশ পড়ে অনেক শ্রমিককে অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে।

এদিকে টানানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রয়ত্ব পাটকল সমূহের বিরাজমান পরিস্থিতি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বিজেএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রয়ত্ব পাটকলসমূহ বন্ধ ঘোষণাপূর্বক, মিলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওত্বায় অবসায়নের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইনে ২০০৬ এর ধারা ২৬ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী নোটিশের মেয়াদে ৬০ দিনের মজুরি, চাকুরীবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য গ্রাচ্যুইটি, পিএফ তহবিলে জমাকৃত সমুদয় অর্থ ও প্রাপ্য গ্রাচ্যুইটির উপর নির্ধারিত হারে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের সুবিধা প্রদান করা হবে শ্রমিক কর্মচারীদের।

জানা যায়, ১৯৬২ সালে ৭৭.০২৫ একর জমির উপর মিলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে মিলটি জাতীয়করণ করা হয়। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ৫৭ বছর যাবত মিলে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।

মিলের শ্রমিকরা বলেন, ‘বর্তমান এ করোনা পরিস্থিতিতে এবং ঈদের আগে মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের হতাশ করেছে। আমরা কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন একেবারে বেকার হয়ে গেলাম।’

মিলের সিবিএ সভাপতি ইউসুফ সর্দার ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান জানান, মিলের শ্রমিকদের ৯ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষ ঈদের আগে যদি ৯ সপ্তাহের মজুরি ও এরিয়ার টাকাটা পরিশোধ করত, তাহলে শ্রমিকরা অন্তত ঈদে যার যার বাড়ি যেতে পারত। মিল বন্ধের জন্য মিলে কর্মরত ৩ হাজার শ্রমিক কর্মচারি বেকার হয়ে পড়ল।

শ্রমিক নেতারা আরও জানান, তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শনিবার বৈঠক আছে। যদি ওখান থেকে কোনো কর্মসূচির ডাক আসে তাহলে তারা কর্মসূচি পালন করবেন।

এদিকে, বাংলাদেশ জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. মতিউর রহমান মণ্ডল জানান,সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ করা হয়েছে মিলের উৎপাদন। এ মিলের মেশিনগুলো ১৯৬২ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। তাই পুরাতন মেশিনগুলো পরিবর্তন করে নতুন মেশিন স্থাপন করে এর আধুনিকায়ন করে নতুন আঙ্গিকে উৎপাদন আবার শুরু করা হবে এবং এই শ্রমিকরাই এখানে কাজ করার সুযোগ পাবে। আর শ্রমিকদের সকল পাওনা টাকার মধ্যে ৫০ ভাগ এককালীন নগদ ও অবশিষ্ট ৫০ ভাগ শ্রমিকদের ভবিষৎ জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিক্তিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।

এদিকে মিলে আর্মস পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও পলাশ থানার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button