আলোচিত

ভুল খবর ছড়ালেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার?

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : লন্ডনে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেয়েছে বাংলা— এ খবর ভাইরাল হয়েছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও ‘সরকারিভাবে মর্যাদা পাওয়ার’ দাবি করে ফেসবুকে তা পোস্ট করেছেন।

গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে পোস্টটি দিয়েছেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেখানে লন্ডনে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলার সরকারিভাবে মর্যাদা পাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। খবর ডয়চে ভেলে’র

ডয়চে ভেলে’র খবরে বলা হয়েছে, খবরটির সত্যতা যাচাই করতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে হাইকমিশনকে এমন কিছু জানানো হয়নি।’’

খুব দায়িত্বশীল পদে থেকেও এমন একটি খবর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি অনেক জায়গায় খবরটি দেখেছি। ভালো লাগা থেকে পোস্টটি শেয়ার করেছি, অন্য কিছু নয়।’’

gazipurkontho

মন্ত্রীর ফেসবুক পোস্ট অনেকেই শেয়ার করছেন। এভাবে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিভ্রান্তির কিছু নেই। খবরটি যদি সত্যি না হয়, তাহলে আমি আরেকটি পোস্ট দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেবো। তবে অফিসিয়াল স্বীকৃতি না পেলেও লন্ডনে যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ বাংলায় কথা বলেন, এটা সত্য। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন তথ্য পেয়েছি।’’

সিটি লিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপের বরাত দিয়ে প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে ভারতের একটি গণমাধ্যম। সেখান থেকেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। জরিপের কথা উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, লন্ডনে সবচেয়ে বেশি মানুষ ইংরেজিতে কথা বলেন, এরপরই বাংলা, তারপর রয়েছে পোলিশ ও তুর্কি ভাষা।

লন্ডনের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র, বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং শহরে ইংরেজির পর কোন ভাষায় বাসিন্দারা বেশি কথা বলেন, সেটা জানতে এই জরিপ চালানো হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেখানে দাবি করা হয়, ‘‘লন্ডনের ৭১ হাজার ৬০৯ জন মানুষ তাদের প্রধান ভাষা হিসেবে বাংলায় কথা বলেন। লন্ডনের ক্যামডেনের ৩ শতাংশ, নিউহ্যামের ৭ শতাংশ এবং টাওয়ার হ্যামলেটের ১৮ শতাংশ বাসিন্দার প্রধান ভাষা বাংলা।’’

এই জরিপের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘‘সিটি লিট নামে যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে, সেটি মূলত শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। আমি নিজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমার মেইলের কোনো জবাব এখনো দেয়নি। রিপোর্টটির অনেক তথ্যই সঠিক নয়৷ সরকারি হিসেবে লন্ডনে সাড়ে ৫ লাখের মতো সিলেটের মানুষ বসবাস করেন। তারা কোন ভাষায় কথা বলেন? এটা কয়েকবছর আগের হিসাব। নতুন হিসেবে সেখানে ‘বাংলাদেশি’ অনেক বেশি। এর বাইরে ভারতেরও বাংলা ভাষাভাষী মানুষ সেখানে আছেন। ফলে যে প্রায় ৭২ হাজার মানুষের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কিভাবে ঠিক হয়? আর স্বীকৃতি তো কাউকে না কাউকে দিতে হবে। লন্ডনের সরকারের তরফ থেকে এমন কোনো স্বীকৃতির খবর আমাদের হাইকমিশনে কেউ জানাননি।’’

গত তিন দিনে দেশের প্রথম শ্রেণির বেশ কয়েকটি দৈনিকেও লন্ডনে বাংলার দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পাওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছে। তবে খবরটি যে সত্য নয় তা ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট ‘লজিক্যাল ইন্ডিয়ান’ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button