অন্যান্যলাইফস্টাইল

জেনে নিন মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের সূচি, ভাড়া ও নিয়মাবলী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ নানা প্রয়োজনে ভারতে ক্রমেই যাতায়াত বাড়ছে বাংলাদেশিদের। ফলে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহও বেড়েছে তাদের। কেননা, ভ্রমণের আগে সময়সূচি ও ভাড়াসহ কিছু নিয়মাবলী জেনে নিলে সুবিধা হয়। ফলে এ রুটে যারা ভ্রমণ করতে চান; তারা জেনে নিন সময়সূচি, ভাড়া ও নিয়মাবলী-

ট্রেন ছাড়ার সময় : আন্তঃদেশীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে কলকাতা সপ্তাহে ৪ দিন যায় বুধবার, শুক্রবার, শনিবার এবং রবিবার। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল সোয়া ৮টায় ছেড়ে কলকাতা চিতপুর স্টেশনে পৌঁছায় বিকেল ৪টায়। কলকাতা থেকে ঢাকা আসে সপ্তাহে ৪ দিন। সোমবার, মঙ্গলবার, শুক্রবার এবং শনিবার। কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে আর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায় বিকাল ৪টা ০৫ মিনিটে।

ট্রেনের ভাড়া: ঢাকা টু কলকাতা এসি কেবিনের প্রতি সিট ২,৯৩৫ টাকা ও ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্সসহ ৩,৪৩৫ টাকা। এসি চেয়ার ১,৯৫৫ টাকা ও ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্সসহ ২,৪৫৫ টাকা। কলকাতা টু ঢাকা এসি কেবিনের প্রতি সিট ২,০১৫ রুপি এবং এসি চেয়ার ১,৩৪৫ রুপি। শিশুদের জন্য ৫০% ডিসকাউন্ট প্রযোজ্য হবে যদি ১-৫ বছরের মধ্যে বয়স হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অনুসারে বয়স নির্ধারিত হবে। সিঙ্গেল কেবিনে ৩টি সিট এবং ডাবল কেবিনে ৬টি সিটের টিকিট দেওয়া হয়।

ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ: ঢাকা টু কলকাতার টিকিট কাটতে হবে কমলাপুর রেল স্টেশন বা চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনের টিকিট আর কোথাও বিক্রি হয় না। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হয়। যাত্রার ২৯ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করা যায়।

প্রত্যেক টিকিটের জন্য কাউন্টারে পাসপোর্টের মূলকপি (ফটোকপি নয়) দেখিয়ে ফরম নিতে হবে। এসময় ফরমে সিরিয়াল নম্বর লিখে দেওয়া হবে। তারপর ফরমটি পূরণ করে অপেক্ষা করতে হবে। সিরিয়াল অনুযায়ী ডাকা হবে টিকিট নেওয়ার জন্য। ভিসা না থাকলেও টিকিট দেওয়া হয় কাউন্টার থেকে। তবে ফিরতি টিকিটের জন্য ভিসা দরকার।

টিকিট ফেরত : যাত্রা শুরুর ১২০ ঘণ্টা আগে ফেরতের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৫ টাকা, ১২০ ঘণ্টার কম ও ৯৬ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০% ভাড়া কর্তনযোগ্য হবে প্রতি টিকিটে। ৯৬ ঘণ্টার কম ও ৭২ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ বাবদ টিকিটের মূল্যের ৭৫% টাকা কর্তনযোগ্য। অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো মূল্য ফেরতযোগ্য নয়।

কলকাতা থেকে ঢাকা ট্রেনের টিকিট কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে কাটতে পারবেন। মোট টিকিটের ২০ শতাংশ টিকিট দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। আর বাকি ৮০ শতাংশ টিকিট কলকাতা কাউন্টার থেকে দেওয়া হয়। কলকাতা টু ঢাকার টিকিট কাটতে হবে ডালহৌসীর ফেয়ারলি প্লেস রেলওয়ে বিল্ডিং বা চিতপুরের কলকাতা টার্মিনাল স্টেশনে গিয়ে। কলকাতা-ঢাকা ট্রেনের টিকিট আর কোথাও বিক্রি হয় না। ফেয়ারলি প্লেসে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হয়। আর কলকাতা স্টেশনে টিকিট দেওয়া হয় স্টেশনের ২য় তলায় বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া : ঢাকা থেকে কলকাতা যাওয়ার সময় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন ফর্ম সংগ্রহ করে সেটা পূরণ করুন। কলকাতা স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ট্রেনে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের ডিসএমবারকেশন কার্ড বা অবতরণপত্র বিতরণ করা হবে। সেটি পূরণ করবেন। ফরমে ঠিকানা ও ফোন নম্বরের জায়গায় আপনার হোটেলের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিবেন। তবে যারা আত্মীয়ের বাসায় উঠবেন; তারা আত্মীয়ের পুরো নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিবেন।

ট্রেন থামার পর দ্রুত ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়ান। এ সময় ভারতীয় কাস্টমসের পক্ষ থেকে একটি ডিক্লারেশন ফরম দেওয়া হবে। সেটি পূরণ করবেন। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পর মালপত্র স্ক্যানিং মেশিনে তুলে তল্লাশি করিয়ে বের হওয়ার আগে পূরণকৃত ফরমটি জমা দিতে হবে। চাকরিজীবীদের এনওসি সাথে রাখা জরুরি।

কলকাতা থেকে ঢাকা আসার সময় সকাল ৫টার মধ্যে কলকাতা চিতপুর স্টেশনে পৌঁছাবেন। কলকাতা স্টেশনে প্রথম কাজ হল ডিক্লারেশন ফরম নিয়ে তা যথাযথভাবে পূরণ করে ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়ানো। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছানোর পর যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের এমবারকেশন কার্ড বা আরোহণপত্র বিতরণ করা হবে। এছাড়া কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতার জন্য কেবিন যাত্রী ও চেয়ার কোচ যাত্রীদের জন্য আলাদা লাইন রয়েছে এ স্টেশনে।

ট্রাভেল ব্যাগের ওজন: একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি ৩৫ কেজি পর্যন্ত মালামাল বিনা মাশুলে নিতে পারবেন দুটো লাগেজে। যদি বাচ্চা থাকে। তবে তার জন্য ২০ কেজি পর্যন্ত বিনা মাশুলে নিতে পারবেন সাথে। ৩৫ কেজির বেশি মালামালের ক্ষেত্রে ৩৫ কেজি থেকে ৫০ কেজি হলে প্রতি কেজিতে ২ ডলার করে মাশুল দিতে হবে প্রতি কেজিতে। তবে ৫০ কেজির বেশি হলে প্রতি কেজিতে ১০ ডলার করে মাশুল গুনতে হবে।

খাবার: ট্রেনে যাত্রীদের সুবিধার্থে সংযোজিত খাবার গাড়িতে হালকা খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। যা যাত্রী কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। খাবারের মেন্যু ও মূল্যতালিকা খাবার গাড়িতে প্রদর্শিত থাকে।

উল্লেখ্য, ভ্রমণকালীন ট্রেন কোথাও অনির্ধারিত যাত্রাবিরতিতে দাঁড়িয়ে পড়লে ট্রেন থেকে ওঠা-নামা দণ্ডনীয় অপরাধ। এমন চেষ্টাকারীকে রেলওয়ে পুলিশের আওতায় ধরিয়ে দেওয়া হবে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button