তথ্য প্রযুক্তিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

অ্যাপভিত্তিক কলিং সেবা চালু : অনুমতি পাচ্ছে আইপি ফোন লাইসেন্সধারী সব প্রতিষ্ঠান

গাজীপুর কণ্ঠ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : দেশব্যাপী সেবা প্রদানের লাইসেন্স রয়েছে, এমন সব আইপি ফোন প্রতিষ্ঠানকে স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ভয়েস কল সেবাদানের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরই মধ্যে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এতে অ্যাপের মাধ্যমেই যেকোনো ফোনে কল করার সুবিধা পাবেন প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকরা।

বর্তমানে দেশে মোট ৪১টি প্রতিষ্ঠানের আইপিটিএসপি লাইসেন্স রয়েছে। এর মধ্যে দেশব্যাপী সেবাদানের লাইসেন্স রয়েছে ৩৩ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া শুধু রাজধানীতে সেবাদানের লাইসেন্স রয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের। আর জোনাল লাইসেন্সের আওতায় দুটি প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রামে সেবাদানের অনুমতি রয়েছে।

গত বছরের এপ্রিলে নভোকমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারক্লাউডকে অ্যাপভিত্তিক কলিং সেবা চালুর অনুমোদন দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট নামের অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। এতে যেকোনো সেলফোন বা ফিক্সড ফোন নম্বরে মিনিটপ্রতি গ্রাহকের ব্যয় হচ্ছে ৩০ পয়সা। গ্রাহকদের দেয়া হচ্ছে ১ সেকেন্ড পালস।

গত বছরের ডিসেম্বরে অনুমোদন দেয়া হয় আরো চারটি প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে রয়েছে বিডিকম অনলাইন লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, মেট্রোনেট বাংলাদেশ ও লিংক থ্রি টেকনোলজিস। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসে অনুমোদন দেয়া হয়েছে আইসিসি কমিউনিকেশনস লিমিটেডকে।

অ্যাপের মাধ্যমে কলিং সেবা চালুর জন্য ১৪টি শর্ত দিয়েছে কমিশন। শর্ত অনুযায়ী, লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ৫ কোটি টাকা জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকি দিতে অ্যাপগুলোর যাতে অপব্যবহার না করা হয়, সে নিশ্চয়তাও দিতে হবে অপারেটরগুলোকে। আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন আইজিডব্লিউ কিংবা আইসিএক্স অপারেটরের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। আর যেকোনো মূল্য সংযোজিত সেবা (ভ্যাস) চালুর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিতে হবে।

অন্যতম আইপিটিএসপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আম্বার আইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল হাকিম বলেন, এর মাধ্যমে বিদ্যমান স্মার্টফোনের মাধ্যমেই আইপিটিএসপির সেবা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি তুলনামূলক স্বল্প ব্যয়ে যোগাযোগের সুযোগ পাবেন গ্রাহকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচলিত আইপি ফোনের গ্রাহক মূলত করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোই। অ্যাপভিত্তিক সেবা চালুর মাধ্যমে ব্যক্তিপর্যায়ের গ্রাহকদের কাছে সেবাটির ব্যাপ্তি বাড়ানো সম্ভব হবে। এমনিতেই ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো ওভার দ্য টপ (ওটিটি) অ্যাপের কারণে বিশ্বব্যাপী সেলফোন অপারেটরদের প্রচলিত ভয়েস কলের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে আইপিটিএসপিদের অ্যাপভিত্তিক এ কলিং সেবায় সেলফোন অপারেটরদের ব্যবসায় নতুন করে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্রে জানা গেছে, ওটিটি অ্যাপগুলোর মাধ্যমে সেলফোন বা ফিক্সড ফোন নম্বরে ফোন করা যায় না। আইপিটিএসপিগুলোর এ সেবার মাধ্যমে অ্যাপ ছাড়াও যেকোনো সেলফোন বা ফিক্সড ফোনে কল করা যাবে। প্রতি মিনিট ৩০-৪০ পয়সা ব্যয়ে গ্রাহকদের কল করার সুবিধা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

ইন্টারনেট প্রটোকলভিত্তিক (আইপি) ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত আইপি টেলিফোন সার্ভিস প্রভাইডারস (আইপিটিএসপি) লাইসেন্সের আওতায় সেবা দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবই দেশের শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি) হিসেবে সেবা দিচ্ছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button