গাজীপুর

স্ত্রীর পরকীয়ায় ছয় বছরের মেয়েকে হত্যা করলো পিতা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী রফিকুল ইসলাম (২৮) শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্ত্রী নাসরিন আক্তারের (২৭) সঙ্গে ঝগড়া করে। ওই রাতে ছয় বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরে শনিবার বিকেলে নিজ সন্তানকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। পরদিন রোববার বিকেল সোয়া চারটায় দিকে তার একমাত্র কন্যা মনিরা খাতুনকে (৬) শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের খাটের নিচে পাতিলের ভেতর রেখে পালিয়ে যান রফিকুল।

নির্মম হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটেছে শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিখণ্ড এলাকায়।

রোববার রাতে পুলিশ শিশুর লাশ উদ্ধার করে এবং সোমবার ভোরে ঘাতক পিতাকে গ্রেপ্তার আদালতে প্রেরণ করেছে।

শ্রীপুর থানার এসআই মাহমুদুল হাসান জানান, নিহতের বাবা রফিকুলকে সোমবার সোয়া ৫টার দিকে গাজীপুর মহানগরের নীলেরপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা খাতুনের আদালতে নির্মম এ হত্যাকান্ডের দায় শিকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রফিকুল।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম কাপাসিয়ার উপজেলার চাপাত গ্রামের মৃত মাইন উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার একই উপজেলার হালজোড় গ্রামের গোলাপ হোসেনের মেয়ে। রফিকুল-নাসরিন দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তান ছিলেন নিহত মনিরা খাতুন।

নিহত শিশু মনিরা খাতুন স্থানীয় হাজী মোহাম্মদ আলী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্লে শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিখণ্ড এলাকার ইয়াসিনের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ডেনিম্যাক গার্মেন্টস্ লিমিটেডে স্বামী-স্ত্রী দুজনই চাকরি করতো। মনিরার মা নাসরিন রোববার বিকেলে কারখানা থেকে বাড়িতে ফিরে মেয়ে ও স্বামীকে না পেয়ে বিষয়টি শ্রীপুর থানায় জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি করে ঘরের খাটের নিচে পাতিলের ভেতর থেকে মনিরার লাশ উদ্ধার করে।

এসআই আরো জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নাসরিন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নাসরিন দ্বিতীয় স্বামীকে বাদ দিয়ে ২০১২ সালে প্রেমের সম্পর্কের জেরে তৃতীয় স্বামী হিসেবে রফিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন। রফিকুলের সঙ্গে বিয়ের আগেও তার দুটি বিয়ে হয়েছিল। রফিকুল ২০১৪ সালে প্রবাস জীবনে ওমান চলে যায়।

রফিকুল প্রবাসী থাকাবস্থায় এ সংসারে মনিরার জন্ম হয়। এরপর নাসরিন অন্য এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ সংবাদে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসেন রফিকুল ইসলাম। দেশে ফেরার পর পরকীয়ার সন্দেহে রফিকুল ও নাসরিনের মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো। এরপর নাসরিন ২০১৭ সালে গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় বসবাস শুরু করে সেখানে একটি কারখানায় চাকরিরত অবস্থায় এক গার্মেন্টস কর্মীর সঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়ে বিয়ে করে। চারমাস পর ওই সংসার থেকে ফিরে এসে আবারও রফিকুলের সঙ্গে সংসার শুরু করে নাসরিন।

এরপর নাসরিন আর কোনো ছেলের সঙ্গে পরকীয়া প্রেম করবে না বলে স্বীকারোক্তি দিলে প্রায় তিন মাস আগে তারা শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিখণ্ড এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button