১৯ মাস বেতন বন্ধ গাজীপুরের ১২ গেইট কিপারের
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রেলপথ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলীর খামখেয়ালীপনায় ধীরাশ্রম ও মীরের বাজার লেভেল ক্রসিংয়ের ১২ অস্থায়ী গেইটম্যান ১৯ মাস বেতন পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় সংসার চালানো এমনকি কারো কারো সন্তানের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
জানা গেছে, ঢাকা বিভাগীয় রেল প্রকৌশল বিভাগের অধীনে গাজীপুরের ধীরাশ্রম ও মীরের বাজার লেভেল ক্রসিংয়ে ১২ জন গেইট কিপার রয়েছে। অস্থায়ী নিয়োগের ভিত্তিতে তাদের মাসিক বেতন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু বরাদ্ধ নেই অজুহাতে গত ১৯ মাস ধরে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। বেতন না পাওয়ায় তারা সংসার চলাচ্ছেন ধারদেনা করে। পাওনাদারের চাপে অনেকে দিশেহারা। টাকার অভাবে অনেকের ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে। গেইট কিপাররা বিভাগীয় প্রকৌশলীর কাছে গেলে তিনি সাক্ষাত দেন না। শান্তনা দূরে থাক, ধমক ও গালমন্দ করেন।
মীরের বাজার লেভেল ক্রসিংয়ের গেইট কিপার মানিক হোসেন জানান, স্ত্রী ছেলেমেয়ে এবং বাবা-মাসহ তার পরিবারের সদস্য ৬ জন। চাকুরির আয়ে সংসার চলে। মেয়ে তৃতীয় ও ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। বেতন না পাওয়ায় ১৯ মাসে ৮০ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে। তারমধ্যে ৩০ হাজার সুদে নেওয়া। প্রতিমাসে সুদ দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। কবে বেতন পাবেন, তাও বলছেন না উর্ধতন কর্মকর্তারা। ঋণ ও অনিশ্চয়তায় তিনি দিশেহারা। তার মত অবস্থা প্রত্যেকের।
ধীরাশ্রমের গেইট কিপার মামুন মিয়া বলেন, মৃত্যু ছাড়া সামনে কোনো পথ দেখতে পাচ্ছেন না। দুই সন্তানের একজন পঞ্চম ও একজন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। টাকার অভাবে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সংসার চালাতে গিয়ে ৭৫ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে। বাধ্য হয়ে স্ত্রী গার্মেন্টে চাকুরি নিয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তারা চেষ্টা করলে দ্রুত বরাদ্ধ আনা অসম্ভব। কিন্তু চিঠি লেখা ছাড়া আর কোনো উদ্যোগ নেই তাদের।
রেল প্রকৌশল বিভাগের টঙ্গী জোনের উর্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, এই দুই লেভেল ক্রসিংয়ের ১২ গেইট কিপারের বেতন সড়ক ও জনপথ বিভাগ দেয়। শর্ত অনুযায়ী বেতনের টাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগ অগ্রিম রেলপথ বিভাগকে দিয়ে থাকে। কিন্তু গত অর্থ বছরে বরাদ্ধ শেষ হওয়ার পর বারবার চিঠি দেওয়ার পরও নতুন করে টাকা বরাদ্ধ না দেওয়ায় ওই ১২ জনের বেতন ১৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এবং খামখেয়ালী ও দুর্ব্যবহারের বিষয়ে কথা বলার জন্য রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী এম ছালামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ‘বরাদ্ধ আসলে বেতন দেওয়া হবে’ জানিয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ